মানবিকতার অনন্য দৃষ্টি স্থাপন করলেন বগুড়া পুলিশ সুপার
বগুড়া শহরের মালতিনগরে করোনায় কর্মহীন ভ্যান চালক রঞ্জু মিয়াকে নতুন ঘর বানিয়ে দিয়ে মানবিকতার অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার মােঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম-বার।
শহরের মালতিনগর স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় সরকারি জমিতে একটি মাটির ঘর তৈরি করে বাপের আমল থেকেই পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন ভ্যান চালক রঞ্জু মিয়া। কিন্তু সম্প্রতি বাড়-বৃষ্টির ভয়ংকর এক রাতে জরাজীর্ণ পুরােনাে সেই মাটির ঘরটি তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে যায়। লক ডাউনে থাকা কর্মহীন রঞ্জু মিয়ার মাথায় যেন বাজ পড়ে। দিশেহারা হয়ে পড়েন রঞ্জু মিয়া । এ অবস্থায় তিনি স্ত্রী এবং দুই শিশু সন্তান নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
এদিকে একজনের ফেসবুক পােস্টে রঞ্জুর দুরাবস্থার কথা জানতে পারেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার মােঃ আলী আশরাফ ভুঞা। জেনেই তিনি খোঁজ খবর নেন রঞ্জু মিয়া ও তার পরিবারের। পুলিশ সুপার তার পারসােনাল টিমকে রঞ্জুর ঘর নির্মাণের দায়িত্ব দেন এবং নিজে তদারকি করেন। ধীরে ধীরে গড়ে উঠল সেই মাটির ঘরের জায়গায় রঞ্জুর স্বপ্নের ঘর, স্বপ্নের নিড়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে সেই ঘর তাকে হস্তান্তর করা হয়। গতকালই রঞ্জু মিয়া পরিবার নিয়ে এই ঘরে ওঠেন। ঘরটি পেয়ে আনন্দ অশ্রু নামে তার চোখে।
এ ব্যাপারে রঞ্জু মিয়া তার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, পুলিশ সুপারের উপহার আধাপাকা ঘরটিতে এখন তিনি তার পরিবার নিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন, এখন ঝড়-বৃষ্টিতেওমাথার ওপর ঘর ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা থাকবেনা। ঘরটি পেয়ে তিনি অভিভূত। পুলিশ সুপারের এই বদান্যতার জন্য তিনি ঘরটি পেলেন। এ জন্য জন্য পুলিশ সুপারকে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
পুলিশ সুপার মো আলী আশরাফ ভূঞা বলেন : মানবিক দায়িত্ব বােধ থেকে তিনি তাকে ঘরটি নির্মাণ করে দিয়েছেন। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। এর মধ্যে আবার ঝড়-বৃষ্টিতেতার মাটির ঘর ভেঙ্গে পড়েছিল । এতে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। একজনের ফেসবুক পােস্ট থেকে বিষয় জানতে পেরে বিষয়টি তার মনে নাড়া দেয়। এ জন্য সামান্য চেষ্টা হিসাবে তিনি তাকে আধাপাকা ঘরটি নির্মাণ করে দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন: পুলিশ সুপার মােঃ আলী আশরাফ ভূঞার ক্রাইম কন্ট্রোলে অসাধারণ কৃতিত্ব, পাশাপাশি সকল মানবিক সামাজিক এবং ব্যতিক্রমী কাজেও অন্যন্য তিনি। তিনি একজন মানবিক বােধসম্পন্ন মানুষ। রঞ্জুর নতুন ঘর হয়তাে এখন সবার চোখে পড়বে কিন্তু এমন বহু রঞ্জু আছে যাদেরকে পুলিশ সুপার সহযােগিতা করেছেন যেটা গ্রহীতা ছাড়া কেউই জানতে পারেনি।