যমুনার বুকে মাছ ধরার নেশা, বিদ্যালয়ে মন বসাতে পারে নি
কিশোর লিমন আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত। বাবা মায়ের সাথে বসবাস করেন বগুড়া জেলার, সারিয়াকান্দি থানার, কালিতলা গ্রামে। তার বাবা লিটন আহমেদ একজন মৎসজীবি।অনেক ছোটবেলা থেকে দেখেছেন তার বাবাকে মাছ শিকার করতে। বাবার সেই পেশাই এখন লিমনের নেশা।যমুনার বুকে মাছ শিকার করার নেশা শ্রেণীকক্ষে তাকে মনযোগী করতে পারে নাই। তাই নদীর বুকে মাছ শিকার করাকেই তার জীবিনের সাথে জড়িয়ে নিয়েছেন।যমুনার সাথে গড়ে তুলেছেন গভীর মিতালী।
লিমনারা ৩ ভাই ১ বোন। বড় ২ ভাই বগুড়া শহরে রড মিস্ত্রির কাজ করেন। ছোট বোন মিম পড়াশোনা করেন ৩য় শ্রেণীতে। লিমন তার বোনকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান। লিমনের মা একজন গৃহিণী।
লিমন জানান, প্রতিদিন বিকালবেলা তারা নদীতে জাল ফেলেন। পরের দিন ভোর ৪ টায় জাল তোলার উদ্দেশ্য ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে মাঝ নদীতে রওনা হন। যেদিন জালে বেশী মাছ আটকা পরে লিমন খুবই খুশী থাকেন ওই দিন।তাদের জালে ধরা পরে চিংড়ি, বাইম, টেংরা, পাবদা, বাঁশপাতারি, স্বরালি সহ বিভিন্ন মাছ। সকাল ৮টার মধ্যে মাছ নিয়ে তারা ঘাটে ফেরেন।
বগুড়া শহর থেকে কিছু মাছ ব্যাবসায়ী প্রতিদিন সকাল বেলা তাদের কাছ থেকে এইসব মাছ সংগ্রহ করে শহরে এনে বিক্রি করেন। লিমন জানান প্রতি কেজি মাছ তারা ৫০০ টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকনে।
লিমন জানান মাছ বিক্রি করেই তাদের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। এটাই তার একমাত্র পেশা ও নেশা।ভবিষ্যতে তার মাছ ধরার নৌকা আরও বড় করতে চান। লিমন বলেন হঠাৎ যখন নদীর বুকে ঝড় উঠে তখন ভয় পেয়ে যান পরক্ষণেই হেসে বলেন নদীই আমার জীবন ভয় কিসের?
লিমন জানান তাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।একদিকে নদী যেমন তাদের ফসলি জমি কেড়ে নিয়েছে অন্যদিকে নদীর মাছ তাদের জীবিকার পথ। যমুনা নদী আর মাছ শিকার লিমন জীবনের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে নিয়েছেন।
লিখেছেনঃ নাইম ইসলাম