কাহালুর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বেহাল দশা, ঝুঁকি নিয়ে যানচলাচল
বগুড়ার কাহালু উপজেলার অধিকাংশ সড়কের বেহাল দশা। একেতো সড়কগুলোর বেশিরভাগেই কার্পেটিং উঠে গিয়েছে, এর উপর বর্ষার বৃষ্টিপাতে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি। ফলে যানবাহন চলাললের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এসব সড়কগুলো। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা।
যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হলেও জীবন-জীবিকার তাগিদে এসব সড়ক দিয়ে বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষকে। ফলে সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা, বিকল হচ্ছে যানবাহন।
এসব সড়কগুলোর মধ্যে রয়েছে- সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে বগুড়া শহরে এই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক বগুড়া তিনমাথা ভায়া কাহালু, কাহালু চারমাথা-দরগাহাট সড়ক, কাহালু-পাঁচপীর সড়ক ও তালোড়া-দেওগ্রাম সড়ক।
এছাড়া এলজিইডির আওতাধীন রাণীরহাট-দেওগ্রাম সড়ক, দূর্গাপুর-পাতাঞ্জ সড়ক, বারমাইল-নামুজা ও সারাই-কাইট সড়ক। এছাড়া আরও বেশ কিছু সড়কের সংস্কারকাজ হয়নি দীর্ঘদিন।
রাস্তার দুপাশে অপরিকল্পিত স্থাপনা গড়ে ওঠার ফলে একটু বৃষ্টি হলে পানি উঠে আসে সড়কে। রাস্তার অনেকাংশে পানি জমে থাকায় সৃষ্ট গর্ত অনুমান করতে পারেন না যানবাহন চালকরা। সংষ্কারের অভাবে কোথাও কোথাও ব্রিজ আংশিক ভেঙে গেছে।
খানা খন্দকে ভরা কাহালু-বগুড়া সড়কে মাঝেমধ্যেই মালবোঝাই ট্রাক উল্টে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায় অন্যান্য যানবাহন চলাচল। সড়কগুলোতে মানুষের বিড়ম্বনা আর ভোগান্তির শেষ নেই। শুধু ভোগান্তি নয়, মানুষের পরিবহন ব্যায় হচ্ছে দিগুণ, আছে জীবনের ঝুঁকি। ভোগান্তিতে পড়া মানুষের মুখে প্রতিনিয়ত শোনা যায় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভের কথা।
রাণীরহাট-দেওগ্রাম সড়কের ট্রাক চালক রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের এই রাস্তা অনেক দিন ধরেই এই অবস্থা। রাস্তার বেশীরভাগ জায়গাতেই বিশাল বিশাল গর্ত। আবার বৃষ্টির সময় পানি দিয়ে গর্তগুলো ভরে যায়। এ রাস্তায় আমাদের গাড়িগুলো অনেক সময় গর্তে আটকে যায় না হলে উল্টে যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি।
অন্যদিকে কাহালু উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মন্ডল জানান, প্রায় ২ বছর হলে কাহালু টু বগুড়া রাস্তা ভেঙ্গে আছে। আমাদের পক্ষে সিএনজি চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ১৫/২০ মিনিটের রাস্তায় এখন লাগে ৪৫ মিনিট।
এসব সড়কের চালক ও যাত্রীরা বলেন, আমাদের এসব রাস্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। শঙ্কায় থাকি না জানি কখন কি দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ভোগের দিকে নজরে নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অতি দ্রুত রাস্তা ঠিক করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে কাহালু উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ইতোমধ্যে রাণীরহাট-দেওগ্রাম সড়ক ও বারমাইল-নামুজা সড়কের টেন্ডার হয়েছে। সেপ্টেম্বরে মধ্যেই এ দুটি রাস্তার কাজ শুরু হবে। বাঁকি সড়কগুলো আগামী অর্থবছরে করে দেওয়া হবে।
বগুড়া জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান জানান, বগুড়া তিনমাথা ভায়া কাহালু-দরগাহাট সড়কের জন্য চাওয়া বরাদ্দ অনুমোদনের পথে।
এ ব্যাপারে কাহালু উপজেলা চেয়ারম্যান আল হাসিবুল হাসান সুরুজের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, আমি এলজিইডি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই রাস্তাগুলোর বিষয়ে কথা বলেছি। টেন্ডার না হওয়া সড়কগুলোর সংস্কারের জন্য তারা প্রয়োজনীয় পদপে নেবে বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের এমপি আলহাজ মোশারফ হোসেন জানান, তিনি সড়কগুলোর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছেন। একটি প্রতিনিধি দল খুব শিগগির সড়কগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।