খেলাধুলা

উন্নতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ লাখ টাকা

বাবাকে এখন আর রিকশা চালাতে হবে না।
আমাদের দুঃখ ঘুচবে উন্নতি খাতুন, ফুটবলার

আগামী ১০ অক্টোবর শুরু হবে জাতীয় দলের মেয়েদের আবাসিক ক্যাম্প। ওই সময় ঢাকায় আসতে চেয়েছিলেন ফুটবলার উন্নতি খাতুন। কিন্তু এর আগেই ঢাকায় আসতে হলো উন্নতিকে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ৫ লাখ টাকার চেক উন্নতির হাতে তুলে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের ২৪ হাজার টাকার মাসিক চেকও উন্নতির হাতে তুলে দেন মন্ত্রী।

বাবাকে এখন আর রিকশা চালাতে হবে না। আমাদের দুঃখ ঘুচবে

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দোহারো গ্রামের কিশোরী উন্নতি। বাবা আবু দাউদ শৈলকুপা শহরে রিকশা চালান। মা হামিদা খাতুন অসুস্থ। সাত ভাই বোনের বিশাল সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো অবস্থা। এই পরিবার থেকে উঠে এসে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে আলো কেড়েছেন উন্নতি।

গত মার্চে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টে খুলনাকে চ্যাম্পিয়ন করায় উন্নতির বড় অবদান ছিল। ৪ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জেতেন। সে সঙ্গে জেতেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ২০১৮ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন উন্নতি। বিকেএসপির হয়ে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সুব্রত কাপেও খেলেছেন। বয়সভিত্তিক দলের গত বছর ভুটানে খেলেছেন সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে। এরপর বঙ্গমাতা ফুটবলে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে সবার মন কাড়েন উন্নতি।

উন্নতির পরিবারের করুণ অবস্থার খবর শুনে প্রধানমন্ত্রী আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নেন। ৫ লাখ টাকার চেক হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত উন্নতি বলছিলেন, ‘আমি তো কল্পনাই করিনি এতগুলো টাকা পাব! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তবে টাকাটা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নিতে পারলে বেশি খুশি হতাম।’

মার্চে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মাঠে বসে উন্নতির খেলা দেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার শেখ হাসিনার হাত থেকেই নিয়েছিলেন উন্নতি। সেদিন উন্নতিকে ডেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘তোমার নাম উন্নতি। তুমি ভবিষ্যতে অনেক উন্নতি করবে।’ অনুদানের টাকা উন্নতির জন্য ভবিষ্যতে ভালো খেলার অনুপ্রেরণা, ‘আমাকে এখন আরও ভালো খেলতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকাগুলো দিয়ে কী করবেন? প্রশ্নটা করতেই উন্নতির হাসিমাখা উত্তর, ‘আমি বাবা-মায়ের হাতে টাকাটা তুলে দেব। এত দিন আমরা অনেক কষ্ট করেছি। বাবাকে এখন আর রিকশা চালাতে হবে না। আমাদের দুঃখ ঘুচবে।’

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button