অনুপ্রেরণাঃ জেনে নিন টাকা উপার্জনের মূলমন্ত্র
আপনি জেনে অবাক হবেন যে, বাফেট যখন কলেজে পড়ার প্রায় শেষের দিকে তখনই তিনি ৯০ হাজার ডলার উপার্জন করে ফেলেছিলেন! তিনি বুঝেছিলেন যে বিনিয়োগের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে তিনি অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
ওয়ারেন বাফেট আমেরিকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং মানবহিতৈষী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তিনি বিশ্বের সবথেকে সফল বিনিয়োগকারী। তিনি তাঁর অর্জিত সম্পদের অধিকাংশই দান করেন। এজন্য তাঁকে দানবীর বলা হয়।
বাল্যকাল থেকেই তাঁর টাকা উপার্জনের ঝোঁক বা লালসা ছিল। এজন্য তিনি তখন সাইকেল চালিয়ে সংবাদপত্র বিক্রি করতেন। যখন তাঁর বয়স ১৫ বছর হয় তখন পত্রিকা বিক্রি করে মাসিক ১৭৫ ডলার উপার্জন করতেন। সেই ডলার তিনি বিনিয়োগ করতেন।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে, বাফেট যখন কলেজে পড়ার প্রায় শেষের দিকে তখনই তিনি ৯০ হাজার ডলার উপার্জন করে ফেলেছিলেন! তিনি বুঝেছিলেন যে বিনিয়োগের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে তিনি অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এই ধারণা থেকেই তিনি তাঁর মাল্টি বিলিয়ন ডলার সাম্রাজ্য দাঁড় করাতে সক্ষম হন।
আজ আমি সফল বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটের অর্থ উপার্জনের কিছু মূলমন্ত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
লাভের অংশ বিনিয়োগ করুন: বিন্দু বিন্দু জল থেকে যেমন সাগর-মহাসাগরের সৃষ্টি হয় তেমনি অল্প অল্প করে অর্থ বাঁচালে তা এক সময় বিশাল সম্পত্তি হয়। অনেকেই আছেন সব টাকাই বিনিয়োগ করে দিতে চান। কিন্তু বাফেট লাভের শতকরা ৫০ ভাগ বিনিয়োগ করার কথা বলেন।
অন্যান্যদের থেকে আগে চলুন: শেয়ার বাজার কিংবা ব্যবসাক্ষেত্রে অন্যান্যদের থেকে আগে চলতে পারলে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন। এসময় আপনি আপনার মৌলিক চিন্তা-ভাবনাকে বিকশিত করতে পারবেন।
এতে আপনি খাঁচার পাখির মত জীবনযাপন থেকে মুক্ত হতে পারবেন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা খাঁটান। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। তাছাড়া আপনার কোথাও ভুল হলে তা বুঝতে পারবেন।
দ্বিধা থেকে বাঁচুন: কোন কাজের সিদ্ধান্ত নিতে দ্রুত দ্বিধামুক্ত হোন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটি আরো বেশি জরুরি।
সিদ্ধান্তের শুরুতে দরদাম বুঝে নিন: কোন কিছুর অর্থাৎ বিনিয়োগ বা ব্যবসার শুরুতেই দরদাম সম্পর্কে ভালভাবে বুঝে নিবেন। দর কষাকষি থেকে আপনার কতটুকু লাভ হবে তার ধারণা নিবেন। কোন কাগজে স্বাক্ষর করতে হলে বুঝেশুনে করবেন। বিনিয়োগের সময় দ্রুত কার্য করতে এসব বিষয় ভুল করা যাবে না।
ছোট ছোট খরচ নিয়ন্ত্রণ করুন: সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ছোট ছোট খরচ নিয়ন্ত্রণ করুন। যদি বিনিয়োগের সময় শুধু বড় বড় খরচের দিকেই নজর রাখেন তবে আপনি ভুল করছেন। খরচের শুরুতেই ভেবে নিবেন খরচটা করা উচিৎ হবে কিনা। মনে রাখবেন ছোট ছোট খরচ গুলোই আপনার স্বপ্ন পূরণে অনেক বড় বাঁধা হতে পারে।
ধার নিয়ন্ত্রণ করুন: স্বপ্ন পূরণ করতে চান? ধার করা থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় ধার শোধ করতে করতেই মূল হারাবেন। ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলবেন না। যে পরিমাণ টাকা হলে আপনার একটা নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হবে ঠিক ঐ পরিমাণ তুলুন।
কাজে ধারাবাহিকা রাখুন: যখন আপনি কোন কাজ শুরু করবেন সেই কাজে ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন বা কাজে স্থায়িত্ব রাখবেন। যদি লাভের পরিমাণ কমও থাকে তবুও লক্ষ্যের দিকে শক্তভাবে পা ফেলবেন।
লোকসান থেকে বাঁচুন: যদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লোকসান হতে থাকে তবে তা দ্রুত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিবেন। লোকসানের সময় অন্যদের হাতে হাত রেখে ঘরে বসে থাকলে আরো বেশি লোকসান হতে পারে। বিনিয়োগের চুক্তির শেষ পর্যন্ত অপেক্ষায় অধিক লোকসানের সম্ভাবনা থাকে।
ঝুঁকি চিত্রায়িত করুন: যখন আপনি বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিবেন তখনই তার ঝুঁকির কথাও চিন্তা করবেন। এই চিন্তার পরই সিদ্ধান্ত নিবেন। ভেবে দেখুন আপনি ঝুঁকি নিতে পারবেন কিনা? অন্যের দেখাদেখি কোনকিছু না ভেবে বিনিয়োগ করলে নিজের ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারেন।
সফলতার সঠিক অর্থ জানুন: সফলতার অর্থ সকলের কাছে একই নয়। শুধুমাত্র টাকা জমা বা উপার্জন করাকেই সফলতা বলে না। জীবনকে অর্থপূর্ণ করাই হচ্ছে সফলতা। আপনার কাছে সফলতার অর্থ কি?
সফল হবার জন্য উপর্যুক্ত বিষয়গুলো একটু ভেবে দেখতে পারেন। চিন্তা-ভাবনা করুন, পরিশ্রম করুন। আশা করি সফল হবেন।
মূলস্রোত: বায়োগ্রাফি ডট কম, উইকিপিডিয়া।