কেউ চেষ্টা করলে ক্রিয়েটিভ হতে পারে!

চাইলেই কি ক্রিয়েটিভ হওয়া যায়? তবে অনেক জিনিয়াস আছে যারা ছোট থেকেই অনেক কিছু পারে। কোনো সিরিয়াস বিষয়ে কৌতূহল অসীম। বাকিরা একটু বড় হয়ে ক্রিয়েটিভ কাজ করে। কেউ কেউ আরেকটু পর থেকে।
মানে চেষ্টা করলে ক্রিয়েটিভ হওয়া যায়। তার কিছু উপায় আছে। একটা নির্দিষ্ট সময় ও পদ্ধতিতে সেদিকে আগাতে হয়, কিছু জিনিস বাদ দিতে হয়, আর প্রতিদিনকার রুটিনে যোগ করতে হয় কিছু কাজ। সেগুলো কী কী?
#১. ইচ্ছাশক্তি
ক্রিয়েটিভিটি একটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রথমে আপনি ক্রিয়েটিভ হবেন, তারপর বিভিন্ন কাজ করবেন সেই ক্রিয়েটিভিটি থেকে। যদি ইচ্ছাশক্তি না থাকে তাহলে এই দীর্ঘ প্রক্রিয়াটির মধ্য দিয়ে আপনি বেশিদিন যেতে পারবেন না।
#২. এক্সপার্ট হয়ে উঠুন
ক্রিয়েটিভ হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়ের একটি হলো সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠা। যেটা করছেন সেটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানতে চেষ্টা করুন, এর মধ্যে যা যা আপনি হাতে-কলমে, প্র্যাকটিস করলেই করতে পারছেন তা শিখে ফেলুন। একবার বিষয়টা হাতে চলে এলে তা নিয়ে অনেক নতুন নতুন ভ্যারিয়েশন বা বিকল্প আপনি ভাবতে পারবেন।
#৩. আগ্রহকে গুরুত্ব দিন
ক্রিয়েটিভিটির পথে অন্যতম বাধা হচ্ছে আগ্রহকে পাত্তা না দেয়া বা সেটা পূরণ না করা। কিছু জানার আগ্রহকে গুরুত্বের সাথে দেখুন।
#৪. রিস্ক নিন
রিস্ক না নিলে, নিজেকে ভুল করার সুযোগ না দিলে কখনোই শিখতে পারবেন না। আপনার কোথায় খামতি, কোন জায়গায় আরেকটু দক্ষতা বা স্কিল ডেভেলপমেন্ট দরকার তা ভুল থেকেই জানতে পারবেন।
#৫. আত্মবিশ্বাস তেরি করুন
নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন ধীরে ধীরে। না হলে অনেক ক্ষেত্রেই চেষ্টা করার ব্যাপারে নিজেকে বাধা দিতে থাকবেন। তাতে আপনার আর ক্রিয়েটিভ হয়ে ওঠা হবে না।
#৬. ক্রিয়েটিভিটির জন্য সময় বের করুন। যেকোনো বিষয়ে ট্যালেন্ট ডেভেলপ করতে সময় দরকার। সেটা আপনার সম্পূর্ণ আয়ত্তে না আসলে ক্রিয়েটিভভাবে ভাবতে পারবেন না।
#৭. নেতিবাচক মনোভাব বাদ দিন
নেতিবাচক মনোভাব আসে ভয়, ঈর্ষা এসব থেকে। তা যদি আপনার মধ্যে থাকে, তাহলে এটা আপনার ক্রিয়েটিভ হওয়ার পথে বাধা হয়ে উঠবে।
#৮. হেরে যাওয়ার ভয়ের সঙ্গে লড়াই করুন
হেরে যাওয়ার ভয় আমাদের প্রত্যেকেরই হয় জীবনের কোনো না কোনো সময়। তা সমস্যার না। কিন্তু যদি এমন হয়, প্রত্যেকটা কাজ করতে গেলে আপনি ভয় পাচ্ছেন, এবং হেরে যাবেন বলে মনে করছেন, তা বরং ফলাফল খারাপ করে দিতে পারে।
#৯. নতুন আইডিয়া ভাবুন
প্রফেশনালদের মধ্যে ব্রেইনস্টর্মিং খুবই কমন। তারা যেকোনো নতু আইডিয়া নিয়ে ভাবতে ও তার কাঠামো তৈরির পেছনে সময় দিতে পছন্দ করে। যার কারণে তারা নতুন সব অসাধারণ জিনিস তৈরি করতে পারেন প্রতিনিয়ত।
#১০. একাধিক সমাধান খোঁজা
একটা সমাধান তো সবাই ভাবতে পারে, কিন্তু একটা সমস্যার একাধিক সমাধান কয়জনের কাছে থাকে?
থাকে, যারা কোনো বিষয়কে বিভিন্ন জায়গা এবং দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে পারে তাদের কাছে থাকে। তারা সবসময় ব্যক্তিগত চিন্তা থেকে জাজ করে না। তাই অনেকভাবে একটা বিষয়কে ব্যাখ্যা করতে পারে।
#১১. ক্রিয়েটিভিটি জার্নাল রাখুন
ক্রিয়েটিভ হওয়ার পথে আপনি কীভাবে আগাচ্ছেন আর কী কী আইডিয়া ও প্রডাক্ট আপনি তৈরি করতে পারলেন তা কোথাও নোট করুন বা রেকর্ড রাখুন। ভবিষ্যতে এই জার্নাল ঘাটলে বুঝতে পারবেন কীভাবে আপনি আগের সমস্যাগুলি সমাধান করেছেন এবং তার আরো কী কী উপায় হতে পারত।
#১২. মাইন্ড ম্যাপ ও ফ্লো চার্ট ব্যবহার করুন
আইডিয়া ও উত্তরের মধ্যে সংযোগ তৈরির খুব ভালো উপায় হচ্ছে মাইন্ডম্যাপ। সেজন্য প্রথমে একটা মুল শব্দ লিখুন, তারপর তার চারপাশে এই বিষয় সংক্রান্ত শব্দগুলি লিখুন। তাহলে আপনার চিন্তার ও কাজের পুরো প্রজেক্টটা চোখের সামনে দেখতে পাবেন। আর ফ্লো চার্ট ব্যবহার করুন নতুন কাজ শুরুর সময়। ফ্লো চার্ট আপনাকে ফাইনাল প্রডাক্টটা কী হতে পারে তা বুঝতে সাহায্য করবে।
#১৩. নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন এবং সুযোগ তৈরি করুন
কিছু বেসিক ক্রিয়েটিভ দক্ষতা অর্জন করে ফেললে এখন আপনার সময় নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার। আরো কঠিন কোনো পদ্ধতি ভাবুন কোনো একটা কাজ বা সমস্যা সমাধানের। নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারের চেষ্টা করুন এবং আগে যেভাবে সমাধান করেছেন তা এড়িয়ে চলুন।
#১৪. প্রেরণার উৎস খুঁজুন
ক্রিয়েটিভিটি এমন কিছু নয় যে চাইলেই হয়ে যাবে। এটা আস্তে আস্তে অভ্যাসে চলে আসার বিষয়। তাই অনুপ্রেরণার জন্য হাতের কাছে যা কিছু পান তা দিয়ে নতুন কিছু ভাবার চেষ্টা করুন। নতুন গান শুনুন, বই পড়ুন বা কোনো নতুন জায়গায় বেড়াতে যান।
#১৫. ভাবুন “যদি এমন হতো”
“যদি এমন হতো” ক্রিয়েটিভ হওয়ার সবচেয়ে মজার আর দ্রুত কার্যকর উপায়ের একটি। তা যে শুধুমাত্র আপনার কল্পনাকে শক্তিশালী করে তা না, একই সঙ্গে একটা জিনিসকে ভিন্নভাবে এবং পরিস্থিতিতে তার অবস্থা কেমন হতে পারে তা ভাবতে শেখায়।