অর্থ ও বানিজ্য

বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্র পেঁয়াজ সংকট মোকাবিলায় নতুন উদ্ভাবন

ভোজনরসিকদের জন্য প্রযুক্তির নতুন উদ্ভাবন। এ যেন রমণীদের রান্না করার জন্য দুশ্চিন্তার মুক্তি। রান্নার কাজে পেঁয়াজ রসুন কাঁচা মরিচ এর থাকবে না আর কোনো সংকট। কোন কিছু পচে নষ্ট হবে না।

হলুদ, জিরা, শুকনা মরিচের মতই কাঁচা পেঁয়াজ, আদা, রসুন আর কাঁচা মরিচের গুড়া আসছে বাজারে। অতি সহজে ঘরেই তৈরি করা যাবে।বগুড়ায় মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন এই প্রযুক্তি। গুড়া মসলার ব্যবহার হলে বাজারে সংকট কেটে যাবে।

দেশে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা মরিচ রান্নায় সাধারনত কাঁচাই ব্যবহার হয়। পঁচনশীল আর সংরক্ষণের অভাবে সারা বছরই এর সংকট থাকছে। হচ্ছে নানা লঙ্কাকাণ্ড। এই সংকট দূর করতে বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা নিয়ে এসেছে গুড়া প্রযুক্তি।কাঁচার বিকল্প হিসেবে সব রান্নাতেই গুড়া ব্যবহার করা যাবে। গুনাগুন থাকবে আগের মতই।

বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রে ড. মাসুদ আলমের তত্ত্বাবধানে গবেষণাগারে গুঁড়া পেঁয়াজের উৎপাদন চলছে। তার গবেষণার বিষয় ছিল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ। তিনি জানালেন, অনেক দেশে পেয়াঁজের গুঁড়ার প্রচলন থাকলেও বাংলাদেশে নেই। এ কারণে তিনি প্রায় ৩ বছর ধরে পেঁয়াজের প্রক্রিয়াজাতকরণ বা পেঁয়াজ গুঁড়া করে সংরক্ষণের বিষয়ে গবেষণা করছেন। তিনি জানান, খুব সাধারণভাবে যেকোনো উদ্যোক্তা ঘরে বসেই এই পেঁয়াজের গুঁড়া উৎপাদন ও সংরক্ষণ করতে পারবেন। এটি ছড়িয়ে দিতে পারলে সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি পেঁয়াজ সংকট আর থাকবে না। এটির পদ্ধতি খুব সাধারণ। খোসা ছাড়িয়ে পেঁয়াজ প্রথমে সস্নাইস করে ভাপ দিতে হবে। পরে তা শুকিয়ে সোডিয়াম মেটাবাইসারফেট দ্রবণে ৪/৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর তা শুকাতে হবে।

এরপর সাধারণ বেস্নন্ডিং মেশিনেই এটি গুড়া করা যাবে। তিনি আরও জানান, এটি নিশ্চিন্তে এক বছর পর্যন্ত ব্যবহার করার কথা তারা বললেও আসলে এই পেঁয়াজের গুঁড়া ২ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। মসলা গবেষকদের বক্তব্য, বারি জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়িয়ে সংকট মেটানোর ক্ষেত্রে পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ তথা গুঁড়া পেঁয়াজ অন্যতম পথ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার একটি সম্ভাবনা রয়েছে।

এ প্রযুক্তি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানালেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত আর সংকট কাটাতে নতুন এ প্রযুক্তি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সকলেই।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button