তথ্য ও প্রযুক্তি

বিজনেস ফেসবুক পেইজে যা যা করবেন না

অনলাইন বিজনেস এখন আনেকটাই ফেসবুক কেন্দ্রিক। প্রচুর নতুন নতুন প্রডাক্টের আইডিয়া নিয়ে মানুষ এখানে ব্যবসা শুরু করছেন। কেউ সফল হচ্ছেন, কেউ হচ্ছেন না।

তার কারণ হতে পারে তাদের প্রোডাক্টগুলিকে তারা সঠিকভাবে কাস্টোমারদের সামনে উপস্থাপন করছেন না। বা পেইজে যথেষ্ট ভেবে চিন্তে পোস্টগুলি করছেন না। ফলে, ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছে না আবার পোস্ট এঙ্গেজমেন্টও তেমন নেই।

এক্ষেত্রে কী করবেন? কোন জিনিসগুলি এড়াবেন পেইজে ক্ষেত্রে?

#১. পেইজের কোনো অংশ খালি রাখবেন না

পেইজ খোলার সময় এবং তারপরে যেই অংশগুলি পূরণ করতে হয়, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই অংশগুলিই আপনার ব্র্যান্ডের হয়ে কথা বলে। আপনার ব্র্যান্ডটা কী নিয়ে, কী কী সার্ভিস দিচ্ছেন, কোন কোন জায়গা থেকে আপনার প্রোডাক্ট অন্যদের চাইতে আলাদা। এই অংশটা কোনোভাবেই খালি রাখবেন না।

#২. সব পোস্টেই প্রডোক্টের প্রমোশন নয়

বিজনেস পেইজ অবশ্যই আপনার প্রোডাক্টের প্রমোশনের জন্য। কিন্তু এমন মাত্রায় করবে না যাতে মনে হয়, আপনি জোর করে ক্রেতাদের ওপর আপনার প্রোডাক্ট চাপিয়ে দিচ্ছেন বা কেনানোর চেষ্টা করছেন। এতে বরং ক্রেতারা বিরক্ত হয়ে আপনার পেইজই আনফলো করে দিতে পারে।

তার বদলে সব পোস্টে সরাসরি প্রমোশন করার চাইতে ওই প্রোডাক্ট নিয়ে গল্প বলুন, মজার তথ্য বা ঘটনা শেয়ার করুন। এছাড়াও আপনার পেইজের সাথে যায় এমন পোস্ট, আপনার ভাবনা, কাস্টোমারদের কথা জানতে চাওয়া, তাদের পছন্দের কথা জানতে চাওয়া এসব চলতে পারে।

#৩. ভুল হ্যাশট্যাগের ব্যবহার

কিছু গবেষণা বলছে হ্যাশট্যাগ দেয়া পোস্টে এঙ্গেজমেন্ট বেশি হয়। যদি ভালো বা যথাযথ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেন, মানুষ যখন ওই শব্দটা দিয়ে সার্চ করবে তখন আপনার পোস্টটাও তাদের সামনে আসবে। তাই চেষ্টা করুন পোস্টে আপনার প্রডাক্টের জন্য ভালো এমন দরকারি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে।

#৪. কাস্টোমারকে প্রডাক্ট কেনার জন্য বারবার নক করা

কাস্টোমার যেটা কিনতে চান, তিনি যদি মনে করেন এই প্রডাক্টটা তার দরকার তিনি তা অবশ্যই কিনবেন। তার এই দরকারটা তৈরির দায়িত্ব আপনার। আপনার প্রোডাক্ট কেন ইউনিক এবং আপনারটাই কেন তিনি কিনবেন তা তুলে ধরতে পারেন পেইজে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট ব্যবহার করে। কিন্তু কেউ কিনতে চেয়েছে কিনছে না বলে তাকে বারবার ম্যাসেজ দিয়ে বিক্রি করবেন না। অনেক ক্রেতা আছেন, কাস্টোমার যদি বলে ‘ভেবে জানাচ্ছি, বা পরে জানাচ্ছি’ তারা দুইদিন পর পর কাস্টোমারদের ম্যাসেজ দিয়ে জানতে চান তিনি পণ্যটি কিনবেন কিনা। এটা একজন কাস্টোমারের জন্য ভোগান্তির। এটা করবেন না। বরং, প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনে মনোযোগ দিন।

#৫. ‘এঙ্গেজমেন্ট-বেইট’

কেউ আপনার প্রোডাক্টের পোস্টে কমেন্ট করছে মানে সে এই বিষয়ে আগ্রহী। নাহলে সময় ব্যয় করে একটা কমেন্ট সে লিখত না। এই কমেন্টটা আপনার ব্যবসার জন্য পজেটিভ। কারণ এই কমেন্টগুলি দিয়েই আপনি আসলে বুঝবেন কে আপনার ক্রেতা, আপনার প্রোডাক্ট মার্কেট কেমন সাড়া জাগাচ্ছে, আর কোনো জিনিগুলিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

অন্যদিকে এঙ্গেজমেন্ট-বেইট হলো, কোনো কিছু জিজ্ঞাসার করার মাধ্যমে পোস্টে রিচ বাড়ানোর চেষ্টা। যেমন, ‘একমত হলে হ্যাঁ বলুন’, ‘একমত হলে পোস্টটি শেয়ার করুন’ বা কোনো পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে মানুষকে এঙ্গেজ হতে বলা। এই ধরনের পোস্ট রিচ বাড়ানোর ভালো উপায় বটে, কিন্তু এই পোস্টগুলি দিয়ে ক্রেতা পাবেন না।

#৬. কাস্টোমারকে রিভিউ দিতে বারবার বলা

ফেসবুকে রিভিউ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রিভিউ দিয়ে বোঝা যায় ওই স্টোরটি কতটা বিশ্বস্ত এবং তাদের প্রোডাক্ট কোয়ালিটি ও সার্ভিস কেমন।

রিভিউ দেয়া মানে কেউ নিজ থেকে আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে বলবে। কিন্তু তাকে যদি আপনি অনুরোধ করেন এবং সেটা বিভিন্নভাবে বলতে থাকেন, কাস্টোমার বিরক্ত হবে। রিভিউ যিনি দেন তাকে সবাই দেখতে পায় রিভিউ সেকশনে, কিন্তু কাস্টোমার হয়ত নিজের প্রাইভেসি রক্ষা করতে চান। এই জায়গাটাতে আপনার ছাড় দিতে হবে। বারবার চেয়ে রিভিউ নিলে কেউ যদি কখনো এই ব্যাপারটা প্রকাশ করে তাহলে মানুষ আপনার প্রোডাক্টের ওপর থেকে আস্থা হারাবে।

#৭. নেগেটিভ রিভিউ নিয়ে পাবলিক পোস্ট করা

সব কাস্টোমার আপনার প্রোডাক্ট পছন্দ করবে, সবাইকে আপনি ইচ্ছা থাকলেই ভালো সার্ভিস দিতে পারবেন, সব কাস্টোমার আপনার চাহিদামতো আচরণ করবে – এই চিন্তাগুলি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। ব্যবসায় অনেক চড়াই উতরাই আছে এবং ভুল হবেই।

নেগেটিভ রিভিউ দেয়া কাস্টোমারকে নিয়ে আলাদা করে পোস্ট দেয়া বা তার সাথে দুর্ব্যবহার করা আনপ্রফেশনাল আচরণ।

প্রোডাক্টটা আপনার নিজের বলে আপনি অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করছেন না এমন ভাবতে পারে অন্যেরা। এই ধরনের পোস্ট না দেয়া সবচেয়ে ভালো। কোনো রাগ, বিরক্তি প্রকাশ না করে বরং আন্তরিকতার সঙ্গে ক্ষমা চান এবং এ বিষয়টা আর কখনো ঘটবে না বলে বিষয়টা ওখানেই মিটিয়ে ফেলুন।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button