স্বপ্নের নায়ক”র সাথে খেলতে নামছে তামিম
স্কোরবোর্ডে যদি পরপর দুইবার তামিম লেখা দেখেন, তাহলে অবাক হবেন কি? হয়তো ভাবতে পারেন ভুল করে দুইবার তামিম বসানো হয়েছে! কিন্তু এমনটা সত্যি-ই হতে পারে ১৩ অক্টোবর তামিম একাদশ বনাম মাহমুদউল্লাহ একাদশের ম্যাচে।
জাতীয় দল ও এইচপির ক্রিকেটারদের নিয়ে ১১ অক্টোবর শুরু হচ্ছে তিন দলের ওয়ানডে প্রতিযোগিতা। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের একাদশে খেলার সুযোগ হয়েছে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ক্রিকেটার তানজিদ হাসান তামিমের। এ দলে ওপেনার হিসেবে আছেন এনামুল হক বিজয়ও। তবে দুই তামিমের ওপেনিংয়ে নামার সম্ভাবনা বেশি।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ছেলে তানজিদ হাসান তামিম। দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে দেখে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নের বীজ বুনেছিলেন জুনিয়র তামিম। তামিমের মতো এই তামিমও ব্যাটিং করেন বাঁহাতে। চনমনে তামিমেরও পছন্দ আগ্রাসী ব্যাটিং।
যার খেলা দেখে বড় হয়েছেন, যাকে আইডল মানেন, সেই স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে ব্যাটিং ওপেন করার রোমাঞ্চে তামিম। বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে রাইজিংবিডিকে তামিম বলেন, ‘তামিম ভাইয়ের দলে খেলা সত্যিই স্বপ্নের মতো। ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে আমি সব সময় তামিম ভাইয়ের থেকে শেখার চেষ্টা করেছি। যদি তার সঙ্গে ওপেনিং করার সুযোগ হয়, ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করার সুযোগ হয় তাহলে সত্যিই দারুণ কিছু হবে।’
ছোটবেলা থেকে তামিমের ঝোঁক ছিল ক্রিকেটের প্রতি। মা রেহেনা বেগমের সমর্থন থাকলেও বাবা তোজাম্মেল হোসেন কোনোমতেই রাজি ছিলেন না ছেলের ক্রিকেট ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে। ২০১৫ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৭ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পান তামিম। উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে (এআইইউবি)।
এরপর বাবার মন গলে। বাবার থেকে তামিম পান সতের হাজার টাকার ব্যাট। ২০১৭ সালে রাজশাহীর বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমিতে তামিমকে দেখে পছন্দ করেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। সেখান থেকে তামিমকে তিনি সুযোগ দেন উত্তরা ক্রিকেট ক্লাবে। এরপর তামিম এগিয়ে যান নিজের চেনা পথে। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে নিয়মিত ভালো করে আলোচনায় আসেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৭ রানের ইনিংস খেলে তামিম নিজের আগমণ জানান দেন। এরপর বিশ্বকাপেও দ্যুতি ছড়ান এ ক্রিকেটার।
বিশ্বকাপের পর করোনায় লকডাউনের আগে গত মার্চে ঢাকা লিগে খেলার কথা ছিল তামিমের। সেই সুযোগ হয়নি। এবার দীর্ঘ সময় পর ফিরছেন ২২ গজে। সেই আনন্দে আত্মহারা যুবা ক্রিকেটার।
‘বিশ্বকাপের পর আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার কথা ছিল। ঢাকা লিগ চলছিল এরপর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও হতো। কিন্তু করোনার কারণে হয়নি। দীর্ঘদিন পর মাঠে ফেরার সুযোগ হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ। শুরুতেই আমরা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পাচ্ছি। আমাদের সামর্থ্য, প্রতিভা তুলে ধরার বড় মঞ্চও এটি। বিশেষ করে সিনিয়রদের থেকে শেখার প্রক্রিয়া এখান থেকেই শুরু হচ্ছে। এজন্য আমি খুব খুশি।’
২০ বছর বয়সী তামিম ডানা মেলতে চান ক্রিকেটাঙ্গনে। শুরুতেই পাশে পাচ্ছেন স্বপ্নের নায়ক তামিম ইকবালকে। তাদের জুটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন দুয়ার উন্মোচন করে কিনা সেটাই দেখার।