শেরপুর উপজেলা

বগুড়ার শেরপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার সাহেববাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত তিনদিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবর্ষণে বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাঁধটির প্রায় এক হাজার মিটার ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

চরম আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন এসব গ্রামসহ নদীপাড়ের মানুষ। তাই বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। নিজেরাই টাকা দিয়ে বালু ও মাটি ভর্তি বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে বিগত কয়েকদিন ধরে করতোয়া নদীর পানিও বেড়েছে। এতে করে নদী তীরবর্তী এলাকায় বাসা-বাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠেছে। বিশেষ করে পৌরসভার দুইটি ওয়ার্ডের শতাধিক বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে বানভাসী অনেক মানুষই স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। পানিবন্দি হয়ে পড়া পরিবারগুলোকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শেরপুর পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিমাই ঘোষ জানান, করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তার ওয়ার্ডের নামা ঘোষপাড়া, পূর্বদত্তপাড়া, উত্তরসাহাপাড়া ও দক্ষিণসাহাপাড়া এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এসব এলাকার শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট। পানিবন্দি হয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। এরমধ্যে বিশ থেকে ত্রিশটি পরিবারের লোকজন বাসা-বাড়ি ছেড়ে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেরপুর ডিজে হাইস্কুলে এবং পনেরটি পরিবার পৌরসভা ও পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মৃতদেহ সৎকারের ঐতিহ্যবাহী মহাশশ্মান শেরপুর উত্তরবাহিনী পৌর মহাশশ্মান বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সৎকার ব্যহৃত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ জানান, তার দফতরের পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ ও বানভাসীদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে পৌরসভার বেশকিছু বাসা-বাড়িতে পানি উঠেছে। তাদের নাম-তালিকা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দিতে পৌর মেয়র সাহেবকে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাওয়া গেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সেখানে জরুরি ভিত্তিতে একটি রিং বাধ তৈরী করা হচ্ছে। এছাড়া বাঙালী নদীর পানি কমে গেলে বাঁধটিতে স্থায়ীভাবে কাজ করা হবে। এজন্য একটি প্রকল্প ইতিমধ্যে অনুমোদন হয়ে গেছে এবং কাজের জন্য ঠিকাদারও নিযুক্ত হয়েছেন। তাই শঙ্কার কোন কারণ নেই বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button