তারুণ্যের কন্ঠস্বর

সমতল থেকে উচু পাহাড়,’আর কতদিন শুনবে ধর্ষিতার হাহাকার!’

১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর হাতে দেশের দুই লক্ষাধিক মা বোন তাদের সম্ভ্রম হারায়। তাদের এই আত্নত্যাগ,সম্মানহানির বিনিময়ে আজকের এই স্বাধীনতা। সেই স্বাধীন দেশের নারী আজ স্বাধীন নয়।ক্রমাগত বেড়েই চলছে ধর্ষণ। কেন এই ধর্ষণ, কেনই বা বাড়ছে এর প্রকোপ?

দেশে নারীরা শিক্ষা, দক্ষতা, যোগ্যতায় এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে নানা প্রতিকুলতায়।নারী পুরুষ এর সমঅধিকার নিশ্চিত করার যেই প্রয়াস থেকে নারীদের অগ্রাধিকার দিয়েছিল সমাজ, সেই সমাজই আজ হরণ করছে নারী অধিকার।

সম্প্রতি এই মহামারিতে করোনা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা দলে দলে রাস্তায় নেমে আসে। তাদের সাথে একাত্নতা প্রকাশ করেন সর্বস্তরের জনগণ। এই ঘৃণ্য অপরাধ নিরসনে বিভিন্ন দাবি করেন।
তার মধ্যে তারা প্রধান দাবি হিসেবে উত্থাপন করেন,
১.ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃর্ত্যুদন্ড করা
২.ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে এর বিচার করে দোষীকে বিচারের আওতায় আনা
৩.ধর্ষিতার চিকিৎসার খরচ বহনে সরকারের সহায়তা
৪.প্রতিটি ঝুকিপূর্ণ রাস্তায় সিসি ক্যামেরা লাগানো।
৫.ধর্ষিতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ করা।
৬.ধর্ষকের পরিচয় যাই হোক না কেন তাকে শাস্তির আওতায় আনা।
৭.ধর্ষিতার পরিচয় গোপন এবং পরবর্তী নিরাপত্তা প্রদান।
এত আন্দোলনের পরেও একদমই কমছে না এর প্রকোপ।দিন দিন বেড়েই চলেছে এই নির্মম কর্মকান্ড।

শিক্ষার্থী সহ সকল স্তরের মানুষ এর দাবিকে মেনে নেয় সরকার।সংশোধন আনা হয়েছে আইনেও।দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আশ্বাসও দেয়া হয়েছে। তবে ধর্ষণ প্রতিকারে শুধুমাত্র শাস্তির বিধানই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন। প্রতিনিয়ত চারপাশে ধর্ষণ ঘটে চলেছে। টিভির নিউজে ধর্ষণ এর কথা বলা হলেই অভিভাবক তাদের সন্তানকে সড়ে যেতে বলেন অথবা চ্যানেল পরিবর্তন করেন, না এভাবে একটি সুস্থ জাতি গঠন সম্ভব নয়।প্রয়োজন সন্তানের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ, ভালো খারাপ এর তথ্য উপস্থাপন এর মাধ্যমে খারাপকে বর্জন করার মানসিকতা তাদের মধ্যে বিকশিত করা।আজকের শিশুরাই আগামির ভবিষ্যত। তাদের চিন্তা চেতনা সুন্দর হলে আগামির সমাজ সুন্দর হবে। সুন্দর হবে বাংলাদেশ।

প্রতিটি জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম,পাড়া, মহল্লায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। অভিভাবকদের তাদের সন্তানের প্রতি সর্তক হতে হবে। যত্ন নিতে হবে তাদের সন্তানদের।এরই সাথে ব্যাধির মত ছড়িয়ে পড়া পর্নগ্রাফিকে বন্ধের পরেও এই অন্ধকার থাবা ভি পি এন সহ নানাধরণের অ্যাপের মাধ্যমে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে তরুণ প্রজন্মের কাছে।

এছাড়া পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব,মাদক আসক্তিও ধর্ষণের জন্য দায়ী। সব মিলিয়ে এই ঘৃণ্য কর্মকান্ড থামাতে প্রয়োজন সর্বাত্নক আন্তরিকতা এবং সেই সাথে সকল শ্রেণির মানুষ এর মূল্যবোধ উন্নতিকরণ।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button