বগুড়া সদর উপজেলা

বগুড়ায় সপরিবার আত্মহত্যার চেষ্টা, স্ত্রীর পর মারা গেল শিশুকন্যাও

বগুড়ায় গর্ভপতী বুলবুলি খাতুনের পর তার ছয় বছরের শিশুকন্যা মেঘলা আকতার নিপুও মারা গেছে।

বগুড়ায় ঋণের বোঝা বইতে না পেরে লেদমিস্ত্রি মহিদুল হাসান (৩০) ও তার স্ত্রী বুলবুলি খাতুন (২০) সহমরণের জন্য মঙ্গলবার রাতে শহরের নওদাপাড়ার বাড়িতে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন।

তারা তাদের একমাত্র মেয়েকেও ট্যাবলেট খাইয়েছিলেন। বুলবুলি বুধবার ভোরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মারা যান। বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ে নিপু মারা যায়। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মহিদুলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, বগুড়া শহরের নওদাপাড়ার লেদমিস্ত্রি মহিদুল হাসান কিনু সদরের লাহিড়িপাড়ার বুলবুলি খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে মেঘলা আকতার নিপু নামে ছয় বছর বয়সী শিশুকন্যা ছিল। কিনু বিভিন্ন এনজিও এবং সমিতি থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মেঘলা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ দেন। করোনার কারণে কাজ না থাকায় তিনি ঋণের কিস্তি টানতে পারছিলেন না। কিস্তি আদায়কারীদের চাপে কিনু ও অন্তঃসত্ত্বা বুলবুলি হতাশ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা সহমরণের সিদ্ধান্ত নেন।

১০ নভেম্বর রাতে একটি গ্যাস ট্যাবলেট ভেঙে মহিদুল ও বুলবুলি খান। কিছু অংশ তাদের শিশুকন্যা নিপুকে খাওয়ান। বিষক্রিয়ায় তারা তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৪টার দিকে তাদের বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১১ নভেম্বর ভোরের দিকে বুলবুলি মারা যান। ১২ নভেম্বর সকালে শিশু নিপুও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কিনু আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, ময়নাতদন্ত শেষে মা ও মেয়ের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঋণের কিস্তির চাপে মহিদুল ও বুলবুলি দম্পতি সহমরণের সিদ্ধান্ত নেন। পরে শিশুকন্যাকেও বিষ খেতে দেয়। এ ব্যাপারে থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা হয়েছে। সে সুস্থ হলে তার বিরুদ্ধে স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যার অভিযোগে মামলা হতে পারে।

এই শিশুকন্যাসহ মায়ের মৃত্যুতে শুধু তাদের পরিবারে নয়, পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে!

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button