হোটেল-রেস্তোরাঁয় উচ্চমূল্য, বিড়ম্বনায় সাজেকে আসা পর্যটকরা
দুর্গম পাহাড়ি এলাকা সাজেকের মনোহর প্রকৃতি দেখতে প্রতিদিন জড়ো হচ্ছে শত শত পর্যটক। সকাল থেকেই খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কে পর্যটকবাহী গাড়ির ভিড় দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও এখন পর্যটকবাহী যানবাহনের উপচে পড়া ভিড়। হোটেলগুলোতে সিট পাওয়াও অনেক সময় ভাগ্যের ব্যাপার। তবে এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। পর্যটকদের অভিযোগ, সাজেকে আবাসিক কটেজ ও খাবারের দাম অযৌক্তিভাবে বেশি নেওয়া হচ্ছে। এতে এখানে এসে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের।
চট্টগ্রাম থেকে সাজেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মশিউল ইসলাম, নোয়াখালী থেকে আসা আশরাফুল আলমসহ অনেকেই জানান, এখানে হোটেল ভাড়া ও খাবারের খরচ তুলনামূলকভাবে দেশের অন্যান্য টুরিস্ট স্পটের চেয়ে বেশি। নির্মল প্রকৃতির কোলে ছুটি কাটাতে আসলেও এখানে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থায় কোনো শৃঙ্খলা নেই। বলতে গেলে আমরা হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে আছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাজেকে নামে-বেনামে ৭০/৮০টি আবাসিক হোটেল থাকলেও সুযোগ-সুবিধার তুলনায় এখানে পর্যটকদের বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। সাজেক আবাসিক হোটেলের মালিক অনিমেষ চাকমা রিংকু জানান, সম্প্রতি শীত মৌসুমে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বেশির ভাগ হোটেলের বুকিং রয়েছে। সাজেক যুবক সমিতির সভাপতি ও মেঘ বেনটার রিসোর্টের মালিক খুশিরাম ত্রিপুরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়াগা থেকে আসা পর্যটকরা বেশির ভাগ সময় দালাল ধরে আসে। এসব দালালরা ভাড়ার টাকায় ভাগ বসায়। তাই শেষ পর্যন্ত পর্যটকদের বেশি ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। খাবার হোটেলগুলোতেও একই কায়দায় বেশি টাকা ধরা হয়। সাজেক উন্নয়ন ফোরামের সম্পাদক ও হেডম্যান লালথাংগা ত্রিপুরা বলেন, সাজেকের হোটেলগুলোতে খাবার পানি আনতে হয় অনেক নিচে থেকে। ১ হাজার ৫০০ লিটার পানি আনতে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। তাই আবাসিক হোটেলে ভাড়াও একটু বেশি।
খাগড়াছড়ি পরিবেশবাদী সংগঠনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, সাজেকে পাহাড়, গাছ কেটে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে অনেক আবাসিক হোটেল। এসব হোটেলে কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। হোটেলের মালিকরা পর্যটকদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো ভাড়া নিচ্ছে। এদিকে খাবার হোটেলগুলোতেও যে যার মতো দাম নিচ্ছে। সাজেক থানার ওসি শাকিল মজুমদার জানান, সাজেকে হোটেল-রেস্তোরাঁর ব্যাপারটি সাধারণত এখানকার উন্নয়ন কমিটি দেখে থাকে। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা পুলিশ প্রশাসন সবসময় তত্পর।