মানুষ is not মানুষ anymore
সেদিন কোথাও আগুন লেগেছিল। আমি বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় ফায়ার সার্ভিস এর সাইরেন শুনতে পেয়ে তাকিয়ে আছি। দেখি মানুষ সেই সাইরেন অগ্রাহ্য করে নিজের মতো চলাফেরা করছে। ফায়ার সার্ভিস এর কর্মীরা গাড়ি থেকে নেমে সবাইকে ধরে ধরেও রাস্তা ফাঁকা করতে পারছে না। আমরা আমাদের নিয়মেই চলছি। কোনো গাড়ি একদিকে চেপে, বা কোনো রিক্সা দুই মিনিট দাঁড়িয়ে নিজের মহামূল্যবান সময় নষ্ট করছে না! এই যান্ত্রিকতার শহরে তাদের প্রতিটি সেকেন্ডের মূল্য যে অনেক, হোক না তাতে অন্যকারো ক্ষতি।
রাস্তায় আবারও জোরে জোরে সাইরেন। এবার কোনো এম্বুলেন্স। ভেতরে কারো মা বা বাবা কারো ভাই বা বোন অথবা খুব নিকট কোনো আত্বীয় হয়ত মৃত্যুর সাথে লড়ছে, হাসপাতালে পৌছানোটা দরকার। কিন্তু তাতে আমার কি বাছা? আমার নিজের কাজ আছে না?
আবার একই ভাবে সাইরেন শুনে পিছে তাকিয়ে দেখি হয়ত কোনো সাধারন গাড়িতে ড্রাইভার সাহেব তার সিগারেটটি ধরিয়ে ইমার্জেন্সি সাইরেন বাজিয়ে চলছেন, জ্যাম কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
এই যান্ত্রিকতার শহরে মানুষের বিবেকটা হারিয়েই গেছে। অন্যের দুঃখ কষ্ট, সমস্যা, কোনো কিছুই যেনো আমাদের ভেতরকে আর স্পর্শ করে না। আবার নিজ স্বার্থে অন্যের বিবেক নিয়ে খেলা করতেও আমারা সংকচ বোধ করিনা। অন্যের বিপদের শব্দেও যদি আমরা থমকে না দাঁড়াই তবে কিসে আমাদের বিবেক জাগবে আমার জানা নাই। ব্যস্ততা আমাদের এতোটাই গ্রাস করেছে যে আমার মনে হয় যম এসে দাঁড়ালেও আমরা বলে ঊঠব, “ভাই একটু দাঁড়ান কাজটা সেরে আসি।”
এই ইট পাথরের শহরে রক্ত মাংসের মানুষগুলো যেন আজ যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। মানুষের সেই মনুষ্যত্ব হারিয়ে মানুষ আর মানুষ নেই।