
স্বপ্ন – একটি ভালোলাগা
স্বপ্ন – দিগন্ত পেরিয়ে রহস্যের ভেদনে মহানন্দযাত্রার কল্পকথা
আমি স্বপ্ন দেখি, এক নতুন প্রভাতের
নির্জীবতার ধুসরতা, চারিদিকের অচেনা শুন্যতা
মিশে যাবে যত বিষণ্ণ রুদ্ধশ্বাস
সজীবতায় ঘেরা মুক্তির সুবাস।
স্বপ্ন দেখি আমি সেই নতুনত্বের।
আমি স্বপ্ন দেখি, এক অচেনা মহাকালের,
কাব্যে গাঁথা এক অনন্য বিকাল-
গোধুলির প্রান্তে সূর্য যবে উত্তাল
বরণ করতে এক স্নিগ্ধ নিশীথের।
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি,
মনের মাঝে ভেঙেছি যত আশীবিষ রাশি রাশি
আমি স্বপ্নঘেরা প্রভাতে এক বাঁধন ছেড়া হাসি
আমি নিশ্চুপ রজনী ক্ষেত্রের অদক্ষ সময়ের চাষী
নব উদ্দীপনের আশায় বিশ্বাসী,
বৈঠার তালে বেজে ওঠে আমার স্বপ্নিল বাঁশি-
আমি আশায় বিশ্বাসী
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি।
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি।
আমি স্বপ্ন দেখি, প্রাণখোলা আঁখি
আমি হতে চাই স্বপ্নময়ী ভোরের পাখি,
ভেসে যায় যতো স্মৃতির আলেখ্য
উত্থান ঘটে নব নব মহাকাব্য
সজীবতা
ছোট্ট শিশুটি ছবির মাঝে, তুলে যে ধরেছে অনন্য সাজে
একটি সুন্দর পৃথিবীর
আমি ভাসতে চাই, এক রঙ্গিলা অভিলাষী
কল্পসাগরে দীপ্তিমান স্বপনা আমার অতলস্পর্শী
আমি স্বপ্ন দেখি স্তব্ধ দুপুর,
আমার আশার পাল্লা বহুদূর
প্রাণরসে পূর্ণ আমার মুক্ত অভিপ্রায়
আমি স্বপ্ন দেখি উড়ুউড়ু অসীম মুগ্ধতায়
আমার স্বপ্নে দিয়েছে যারা শকুনচোখ
কাঁদিনি কখনো, স্বপ্নিল এখনো আমার সৃজনের মুখ
করেনি আমায় বিষণ্ণ, আমার অভিলাষ অনন্য
আমি নতুনত্বের পথযাত্রী
আমি আশায় বিশ্বাসী
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি।
আমি দুর্নীতিরাবসান, আমার কাব্য অনির্বাণ
আমি সৃষ্টির উত্থান, আমি জেগে ওঠা অভ্যুত্থান,
আমি স্বপ্নঘোর রূপকথার রাজ্য
ভেংগে ফেলব যত অজানার রহস্য।
গহনো মেঘেরো শুভ্র তলে আমারো স্বপ্ন অবিচল
আমার আশবাণী যে চির উত্তল।
আমি স্বপ্ন দেখি সুন্দর এক পৃথিবীর
আমি চির অম্লান, আমার অভিপ্রায় দেদীপ্যমান
আমি মানবতার অধিকার, আমার স্বপ্ন দুর্নিবার
আমি পূর্ণিমা নিশীথের রূপোলী ছায়া,
আমি রাতজাগা রজনীগন্ধার দৃষ্টি
যৌবনা চন্দ্রিমার।
নিস্তব্ধ প্রকৃতির প্রেমিক, অলক্ষ্য সৃষ্ট মায়া।
আমি স্বপ্নদেখা ফাহিমের গল্প, আমি অপূর্ণ আবরারের চোখে দেখা ভবিষ্যৎ
আমি নাতিদীর্ঘ নুসরাতের ব্যাকুল আকুতি
আমি রূপ্ত রিফাতের অসমাপ্ত ব্যাপ্তি।
ভস্মীভূত!! ভস্মীভূত!
সে তো তোমাদের দৃষ্টির সীমানা!
কোথায় গেল! নাকি হারিয়ে ফেলেছে ঠিকানা
ভাবে ঠাসা সেই সুদর্শন মনোযান?
আমার স্বপ্ন তো তা নয়
যার বিস্তার দোদুল্যমান।
আমার স্বপ্ন – এক ভিন্নার্থ
আমি বিস্তর, আমি অনন্য
আমার কাব্য সেদিন হবে ধন্য
আমি দেখেছি আমি শুনেছি
আমার স্বপ্ন পেয়েছে পূর্ণতা
ছোটলোকের গড়া সস্তার ফেস্টুন বুকে
আমার মাঝের আমি- যেদিন বিস্তর দিকে দিকে
দেখিয়ে দিয়েছি, সোল্লাসে মেতেছি,
আগামীর পথযাত্রী
দেখতে চাই না, দেখতে চাইনা!
আর কোনো নৃসংশ ভয়াল রাত্রি।।
চলনবিল চাষার সেই চিরচেনা হিম্মত
আর মুমূর্ষু বৃদ্ধার ইন্দ্রাণী সব গল্প,
হারিয়ে দিয়েছে! হারিয়ে দিয়েছে!
তোমাদের যত কথার মাঝের নিষ্ঠুরতার গল্প,
আমার স্বপ্নে দেখা সেই যে রাজ্য-
চাইনা! চাইনা কোনো দুরাশার আশকাব্য।
আমি আজও অটল, চেয়ে গিয়েছি এক মুক্ত স্বাদ
স্বপনা নহে অতল, তোমাদের চোখে পবিত্রতার খাদ।
বুঝিনা আমি তব রাজায় রাজায় খেলা
বুঝিনা আমি যত হৃদয়োচ্ছাস বেলা অবেলা।
আমি বুঝি এক আমার আমি
আমি বুঝি জয় বাংলার স্বপ্নময়ী বাণী
বুঝি ত্রিশ লক্ষ হৃদপিন্ডের নিরুত্তর কাঁপুনি
আমি বুঝি শেখ মুজিবের বজ্রকণ্ঠবাণী
আমি বুঝি,
আমি ক্লান্ত দুপুরে ছবি আঁকি,
আমি স্বপ্ন দেখি,
আমার সোনার বাংলার হাতছানি।
স্বপ্ন দেখেছি, প্রাণ খুলে গেয়েছি
চিরসজীবতার গান,
দেখেছি সব সহিংসতার অবসান
একটি নতুন হাওয়ার স্বাদ।
দক্ষতার মধ্যে সমস্যার সমাধান
চিন্তাশীল সেই নবীন পৃথিবী,
নিশ্চুপ, নিস্তব্ধ, অনন্যতার সন্ধান
স্বকীয় সত্তায় বিশ্বাসী
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি।।।।
——–.—–.——.———-
এপিজে আব্দুল কালাম স্যার বলেছিলেন,
“স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যা তাকে ঘুমাতে দেয় না।” আমাদের স্বপ্ন কোনো ভ্রান্তির নয়।
একটা সুন্দর পৃথিবী– আমরা সবাই চাই। এর জন্য প্রয়োজন চেতনামূলে বিস্ফোরণ। সাময়িক ধোঁয়াশা দিয়ে কতো ঘটনাকে অদৃশ্য করে দেয়াই যায়, কিন্তু স্থায়ী সমাধান- সেটাই তো আমাদের অভ্যুদয়।একবার ভেবে দেখুন, শেখ মুজিবর রহমান রাজনীতির শোভা মানুষের মাঝে এমন ভাবে ছড়িয়েছিলেন, মানুষ দলে দলে জীবন বিপন্ন করেছিল দেশের স্বার্থে। আমাদের দেশের অপরাজনীতি আর দূর্নীতির অবসানের মাধ্যমে সুশাসন আমরা চাই।।
বাহ্যিক হঠকারিতা আর আত্মার শক্তির উচ্ছাসের দিকে যদি বিশ্ব র্যাংকিং করা হয়, আমার বিশ্বাস, আমার দেশ চ্যাম্পিয়ন না হোক, প্রথম ৫ এর মাঝে থাকবেই। পার্থক্যটা শুধু “অপ” শব্দটার মাঝেই লুকানো। বিশাল এ জনসম্পদকে কোনোভাবে যদি উদ্বোধিত করা যায় চিন্তাশীলতার জগতে, সোনার বাংলা দূরে কই। আমাদের দেশের সন্তানেরা কতোটা মেধাবি তার সাক্ষর আজও অম্লান আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোর টপ লিস্টে। কিন্তু তারপর! গাছে তুলে মই কেড়ে নেয়া– বাংলাদেশে খুবই প্রচলিত। এক বাংলাদেশি ছেলে যেখানে সামনে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের জন্য একগাদা বই মুখস্থ করার মহাযাত্রায় পা বাড়িয়েছে, সেখানে একই মেধা নিয়ে জাপানের ছেলে হয়তো নিজের সময় কাটাচ্ছে নতুনত্বের প্রয়াসে হয়তো নতুন এপ্লিকেশন তৈরি কিংবা মজার কোনো ম্যাথেমেটিকাল প্রব্লেম সলভিং এর মাঝে।
এই পার্থক্য না থাকলে আমরা বুঝতাম যে, আমাদের ছেলেরা আজ গুগলে শুধু চাকরিই করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, নতুন কোনো সার্চ ইঞ্জিন তৈরিতে নয়। গাণিতিক সমাধানের দৃষ্টিতে বলতে হয়, আমরা অনুশীলনে অভ্যস্থ, সমস্যা সমাধানে নয়। নাহলে আজ বিজ্ঞান পড়তে গিয়ে প্রতিটি বাক্যে “কেন” এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠতাম, ফিজিক্স পরীক্ষায় পাশ করার জন্য না। বিশ্বাস রাখি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সেই স্বপ্নিল উন্নয়নের। একটি চিন্তাশীল, বাস্তবমুখী, যুক্তিবাদী সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে আমরা ভালোবাসি।
মোঃ তাহমিদুল ইসলাম | নব্যদীপ্তি_শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য