আজ ১৩ ডিসেম্বর কাহালু হানাদার মুক্ত দিবস
বাংলাদেশ আজ স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ, কিন্তু একসময় দেশটি পাকিস্তানি শাসকদের হাতে পরাধীন ছিল। দীর্ঘ ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে এসেছে এই বিজয়। স্বাধীনতার ইতিহাসে দেশের অন্যান্য থানার মতো বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলাতেও এমনি অনেক লোমহর্ষকর ইতিহাস রয়েছে। এসব খন্ড খন্ড কাহিনীর মধ্যে দিয়ে বগুড়ার কাহালু থানা হানাদার মুক্ত হয়। কাহালু উপজেলা সাহসী বীরমুক্তিযোদ্ধারা তাদের মুখে জানান এসব অনেক লোমহৌসকর কাহিনি।
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অত্র উপজেলার বামুজা, জয়তুল, নশিরপাড়া বীরপালা সহ বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ ও খন্ড খন্ড যুদ্ধ হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি পাকসেনারা ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর কাহালু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫২৯ জন নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করে । শক্রুসেনা ও তাদের দোসররা প্রায় ৫৩৩ বাড়িতে লুটপাট অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে। তৎকালীন কমান্ডার হোসেন আলীর নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মেজর জাকিরসহ পাকসেনাদের অবস্থা বানচাল করে দেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে বগুড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাকসেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে।
অবশেষে মেজর জাকির, কর্নেল তোজাম্মেল সহ প্রায় ১৬ জন পাকসেনা ১৩ ডিসেম্বর সকালে বগুড়া থেকে পালিয়ে এসে কাহালু চারমাথায় যুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার কাহালুর জামগ্রাম ইউনিয়নের পানাই গ্রামের টগবগে যুবক বীরমুক্তিযোদ্ধা ও কাহালু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা অধ্য মরহুম আলহাজ্ব হোসেন আলীর কাছে অস্ত্র সহ আত্মসমর্পন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে পাক-হানাদারদের সাথে লড়াই করে স্বাধীনতার ৩ দিন আগে ১৯৭১ইং সালের ১৩ ডিসেম্বর কাহালু থানাকে হানাদার মুক্ত করতে সম হয়েছিলেন।
কাহালু উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজিবর রহমান বলেন, “মরহুম অধ্যক্ষ হোসেন আলীর নেতৃত্বে আমরা এদিনে কাহালুকে পাকহানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত করেছি। আজ আমরা আমাদের যথাযথ সম্মান পেয়ে অত্যান্ত খুশি। ধন্যবাদ বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে।”