“মানসিক ব্যাধিতে পরিবার ও সমাজ”

মানসিক ব্যাধি বা Mental disorder একপ্রকার ব্যবহারিক বা মানসিক দুর্দশা যা সামাজিক বা প্রচলিত সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত নয়।
প্রকৃতপক্ষে চিকিৎসা বিজ্ঞানে মানসিক ব্যাধি হিসেবে যা বুঝানো হয় তার জন্য কোনো কার্যকরী সংজ্ঞা নেই।কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞানে মানসিক রোগের বিভিন্ন স্তর রয়েছে এবং একেক স্তরে এই রোগের ধরণ একেক রকম।
বর্তমানে পাওয়া তথ্যানুসারে,প্রচলিত মনস্তাত্ত্বিক সংক্রমণ,যেমনঃ বিষণ্ণতা(depression) দ্বারা প্রায় ৪০০ মিলয়ন,ডিমেশিয়া(dementia) দ্বারা প্রায় ৩৫ মিলিয়ন, সিজোফ্রেনিয়া(schizophrenia)দ্বারা বিশ্বব্যাপী ২১ মিলয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়াও সারা পৃথিবীর অনেক মানুষ নানান ধরণের মানসিক রোগে আক্রান্ত রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে।পারিবারিক কলহ,শারীরিক-মানসিক নির্যাতন,বিচ্ছেদ,প্রতারণা-বঞ্চনা,জীবনের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থতা,দীর্ঘ অসুস্থতা,স্বজনের মৃত্যু,অভাব-অনটন,মর্যাদাহানি,হতাশা,ভয়-ভীতি ইত্যাদি নানা কারণে মানসিক।ব্যাধির সূত্রপাত হতে পারে।
এসব মানসিক সমস্যার জন্য পরিবার ও সমাজ অনেকাংশে দায়ী।পরিবার ও সমাজের মানুষ এবং আশেপাশের পরিবেশের নানা বিরূপ প্রভাবে একে তো মানুষ এসব mental disorder এর সম্মুখীন হয় এবং আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের অসহযোগিতায় তা আরো ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে।
কোনো কারণে হতাশাগ্রস্ত হলে সেই বিষয় নিয়ে কটূক্তি করে মানুষের মানসিক অবস্থা আরও দুর্বিষহ করে তোলা হয়।আস্তে আস্তে তা মানসিক রোগের দিকে ধাবিত হয়।ফলে একজন মানুষ তার জীবনের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর সেই মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন হলে বেশিরভাগ সময়ই অজ্ঞতার কারণে মানুষ তা বোঝে না,ফলে তাকে ‘পাগল’,’মাথাখারাপ’ ইত্যাদি বলে সম্বোধন করর।অনেক সময় তাকে পাগলা গারদে প্রেরণের হুমকি দেয় এমনকি প্রেরণের ব্যবস্থা করে।তাকে ঘরে বন্দি করে রাখে।এভাবে একটি সুন্দর জীবন নষ্ট হয়ে যায়।অথচ পরিবার তাকে যোগ্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে তার রোগ অনেকাংশে কমে যাবে।চিকিৎসার সাথে সাথে প্রয়োজন পরিবার ও সমাজের সহযোগিতাপূর্ণ ও সহৃদয় আচরণ।এই সহযোগিতা টুকু করলে একটি প্রাণ ফিরে পাবে আবার নতুন করে বাঁচার আঃশ্বাস।
এজন্য মানসিক ব্যাধি নয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে আমাদের সবার।নয়ত ছোটোখাটো মানসিক সমস্যা থেকে একটি মানু্ষের জীবন শেষ হয়ে যাবে।
খায়রুন নিয়াম
নব্যদীপ্তি।