শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০,প্রথম প্রহর রাত ১২.০১ মিনিট থেকে শুরু করে রাত ১২ টা অবধি চলবে নানা আয়োজন। আজ বাংলাদেশের জন্মদিন। আজ গর্বের বীরত্বের স্মৃতির চরম বহিপ্রকাশের দিন।আজ দশটা বাঙালির মত সকাল ৬ টায় উঠে ফুল দেয়ার জন্য তৈরি হয়ে রাস্তায় বের হলাম।মিছিলে মিছিলে লাল সবুজের জয়গান।নতুন পাঞ্জাবি,চাদর,সোয়েটার,ফরমাল ইনফরমালের চাকচিক্যতে বেশ বুঝা কঠিন বাংলাদেশ একটা মধ্যেম আয়ের দেশ। সকলেই তাদের সাধ্যের শেষ সীমানায় গিয়েও আজকের জন্য নিজেকে সুসজ্জিত করেছে,যা তথাকথিত তাদের কাছে দেশপ্রেম।সকালে রিকশার অভাবে হেটে যাওয়ার পথে এই চাকচিক্যতার ফিরে কিছু মানুষকে খুজে পেলাম। এই শীতের ভোরে তারা রেল স্টেশন এর সামনে জীর্ণ অবস্থায় শুয়ে আছে।খেয়াল করলাম রেল স্টেশনে বয়স্ক এক লোকের পাশে শুয়ে থাকা একটা ছোট্ট ছেলে অর্ধ শায়িত হয়ে তাকিয়ে আছে যাতায়াতরত মানুষ এর দিকে।হয়ত সে জানে মাইকের এত কোলাহল কিসের,কিসেরই বা এই সাজ সাজ ধ্বনি। তারও হয়ত ইচ্ছে হচ্ছিল সবার মত সুন্দর পাঞ্জাবি পড়ে সেই লাইন ধরে হেটে যেতে।
দেশমাতৃকা বাংলাদেশের আজ জন্মদিন।সেই জন্মদিনে কেউ কেউ উদযাপন করছেন মাত্রা ছাড়িয়ে,আবার কেউ কেউ নিশ্চিত করতে পারছেন না তাদের বেচে থাকার নূন্যতম চাহিদা।প্রশ্ন থেকে যায় বিজয়ের ৪৯ বছরেও কেন অর্থনৈতিক ভাবে আমরা বিজয় লাভ করতে ব্যর্থ?মধ্যম আয়ের দেশে কেন এক শ্রেণির মানুষ কেন এখনো শিক্ষার আলো, বাসস্থান এর অধিকার থেকে বঞ্চিত? দেশের ধন বৃদ্ধি মানে ধনিদের ধন বৃদ্ধি এই বিষয় থেকে বেরিয়ে না আসা অবধি বাংলাদেশ প্রকৃত বিজয় লাভ করবে না।প্রতিটি মানুষ এর উপলব্ধি করতে হবে ১৬ ডিসেম্বর আর ২৬ মার্চ শহীদ মিনারে ফুল দেয়া মানে দেশ প্রেম নয়।দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে,দেশের সকলকে ৩৬৫ দিন ভালোবাসতে হয়।
মুক্তি একটি নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। নিজের মুক্তি ধরে রেখে সর্বভৌম থাকতে যেমন প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয় তেমন মুক্তিযুদ্ধ করে জয় লাভ করলেই কাজ শেষ হয়ে যায় না।সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয় দিনের পর দিন।।।।।।।।
আরেকটিবার বাংলাদেশ বিজয় লাভ করুক।আরেকবার হোক যুদ্ধ। তবে এবার পাকিস্তান বা অন্য দেশের বিরুদ্ধে নয়,নিজেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, লোভের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, নারী পুরুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
জাকি তাজওয়ার সমুদ্র
নব্যদীপ্তিশুদ্ধচিন্তায়_তারুণ্য