কিশোর গ্যাং এর উপদ্রবে ঝুকিতে জলেশ্বরীতলা

বগুড়া শহরের মূলকেন্দ্র সাতমাথা হলেও বর্তমানে ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ জলেশ্বরীতলা এলাকা।নামি দামি রেস্টুরেন্ট সহ ব্যান্ডের শপের অবস্থান সব মিলয়ে জায়গাটিকে বগুড়া শহরের ২য় প্রাণকেন্দ্র বললে ভুল হবে না। এলাকাটি বগুড়া পৌরসভার ৭ নাম্বার ওয়ার্ডে অবস্থিত ।এই সুন্দর স্থানটি বড় বড় দালানে যেমন একদিকে সুন্দর ও সুজজ্জিত হয়ে উঠছে দিন দিন তেমনই কতিপয় কিছু সমস্যার কারণে অপরদিকে স্থানটি হারাচ্ছে তার পরিবেশ এবং গুনগত মান। কোচিং সেন্টার সহ বিভিন্ন প্রাইভেট টিউশনের কারণে শিক্ষার্থীদের যাওয়া আসার সব সময় এলাকাটিতে জন সমাগম লেগেই থাকে।সেই সাথে শপিং সেন্টার এবং রেস্টুরেন্টেও বিভিন্ন স্থান থেকে লোক সমাগম দেখা যায়। যার ফলে ভি আই পি এরিয়া খ্যাত স্থানটি হয়ে পড়েছে অত্যাধিক জন বহুল স্থান।
তবে মূল সমস্যা প্রাইভেট এ আসা শিক্ষার্থীরা এই স্থানের বিভিন্ন স্থানে একত্রিত হয়ে বিভিন্ন মোড়ে দাড়ায়।এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিভিন্ন বয়সের মানুষদের।অনিয়ন্ত্রিত আড্ডার ফলে নস্ট হয় এই সুন্দর মনোরম স্থানের পরিবেশ।এছাড়া বিভিন্ন সময় পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মত ঘটনাও দেখা গিয়েছে।এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন সময় গ্রুপিং হয়েছে।তৈরি হয়েছে কিশোর গ্যাং।এই কিশোর গ্যাং গুলো আরও খানিকটা বেপড়োয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার প্রশয়ে।এ থেকে বিগত দিনগুলোতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন অরাজকতা।এছাড়া এসকল কিশোর গ্যাং দিয়ে বিভিন্ন সময় ইভটিজিং এর শিকার হওয়ার খবরও শোনা গেছে বিভিন্ন সময়ে।প্রাইভেট পড়ুয়া নারী শিক্ষার্থীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বেশ কিছু সময় ধরে।পরিবারকে বলার সাহস না পাওয়ার দিনের পর দিন অনেকে মানসিক অসুস্থিতে ভুগেছে।সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না আসলেও বিভিন্ন মহল লক্ষ্য করেছে নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় অনিরাপত্তার শিকার হতে হয়েছে।বিভিন্ন প্রাইভেট কোচিং সেন্টার ছুটির পূর্বে তার সামনে দাড়িয়ে থেকে উত্যক্ত করারও বেশ কিছু নজির রয়েছে।জলেশ্বরীতলার বিভিন্ন পয়েন্ট এ কিশোর যুবকরা বেপরোয়াভাবে আড্ডার স্থান নির্ধারণ করেছে।জেল খানার মোড়,মহিলা ক্লাবের সামনের অংশ,আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠ, নুর মসজিদ সংলগ্ন স্থান সহ বিভিন্ন অলি গলিতে জটলা পাকিয়ে প্রতিনিয়ত নানাবিধ মারামারি, গ্রুপিং লক্ষনীয়ভাবে বেড়ে উঠেছিল।
এছাড়া কিশোরদের উচ্চ মাত্রায় বাইক চালানো এই স্থানের সড়ককে অনিরাপদ করে তুলেছে।প্রতিনিয়ত অধিক গতিতে বাইক চালিয়ে হর্ন বাজিয়ে শব্দ দূষণ নিত্যদিনের দৃশ্য হয়ে দাড়িয়েছে।হেলমেট না পড়ে নিয়ন্ত্রিত গতিতে বাইক চালানো যেখানে ঠিক নয়, সেখানে অধিক গতিতে পাল্লা দিয়ে রাস্তায় চলছে বাইক রাইডিং। লাইসেন্স ছাড়া অধিকাংশ বাইক চালক(কিশোর,যুবক) নানা সময়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছে।এছাড়া এসব ঘটনায় বিভিন্ন পথচারীও আহত হয়েছে।
বিষয় গুলির জন্য এই বাণিজ্যিক এলাকার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রসাশনকে একাধিকার অবগত করেন জলেশ্বরী তলা ব্যবসায়ী সমিতি।বিভিন্ন পদক্ষেপও নেয়া হয় প্রসাশনের পক্ষ থেকে। যেমন,বিভিন্ন সময় বাইকের কাগজপত্র নিরীক্ষা করে দেখা, যেখানে সেখানে আড্ডাবাজি না করার পরামর্শ সহ নানা উদ্যোগ নেয় প্রসাশন তবে তা দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় এই সমস্যা সাময়িক থেমে গেলেও নির্মুল করা সম্ভব হয় নি।তবে করোনাকালীয় সময়ে প্রাইভেট ,কোচিং বন্ধ থাকায় এই সমস্যা কমেছে অনেকাংশ ।আগামির দিনগুলোতে এই স্থান নিরাপদ ও সুন্দর রাখতে পুলিশ,প্রসাশন এবং জনগন সকলের তীক্ষ্ন নজর প্রদান করতে হবে।শুধু জলেশ্বরীতলা নয় প্রতিটি এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত মানুষদের মনিটরিং করতে হবে।সেই সাথে অভিভাবকদের তাদের সন্তানের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণের মাধ্যমে সামাজিক মূল্যবোধ শেখাতে হবে।।
জাকি তাজওয়ার সমুদ্র
নব্যদীপ্তিশুদ্ধচিন্তায় তারুণ্য