Era of love—আধুনিক ভালোবাসা

ভালোবাসা নিয়ে এ যুগের বা জেনারেশনের যেটাই বলুন!! একটা প্রচন্ড নাটকীয় ভাব কাজ করে, এর মানে এই না যে আমি এর বাইরে, আমিও এমন এক রাজ্যের ই রাজা ছিলাম, প্রকৃত ভালোবাসার প্রতি অন্ধ চাহিদা আর “মেয়ে সুন্দর”, “বয়সে ছোট”, “ব্রাক্ষণ” ইত্যাদি কিছু নিয়ামক মিলে যাওয়ায় খুশিতে ‘রিলেশনে’ গিয়ে ছিলাম আই রিপিট “রিলেশন”। যদিও আমার দিক থেকে তা টুরু লাভের চাইতে কম কিছু ছিল না, বাট নদীর ওপার থেকে কোন নিশ্বাসই পাই নি ( এখন বুঝি)।
ভীষ্মের মত শরশয্যায় পতিত হয়েছিলাম যখন কিছু দৃশ্য অক্ষিকোটরে লবনাক্ত স্রোতের সৃষ্টি করেছিলো, পরবর্তীতে ইচ্ছা মৃত্যু বেছে নিয়েছিলাম। যাই হোক আমার এই সব স্টোরি না হয় নাই বলি
বলছিলাম কি আজিব এই যুগ, যা রোম্যান্টিসিজমের মধ্যে থেকেও ভালোবাসার মূলভাব টাকে হৃদয়ংগম করতে পারে নি।
তরুনরা এই সংকর জাতের ভালোবাসার নাম দেয় “রিলেশনশিপ”
যেটাকে আপনি “ডিজায়ার ফুলফিলিং প্রফিসিয়েন্সি” ও বলতে পারেন। যুগ বদলাইছে তথাকথিত ভাবে মর্ডার্ণ হতে গেলে নগ্নতা আর রিলেশনশিপ শো অফ করাটা অবশ্য কর্তব্য। একটা প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে আর ছেলের ঘনিষ্ঠতা আর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কে আধুনিকতা বলে নষ্টামিকে এটা তার ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে চালায়ে একটা বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দীর্ঘদিন তাকে নিয়ে সুখে দুঃখে কাটানোর শিক্ষা পাওয়া যায়?
যেখানে আপনি আপনার ২০ বছরের লাইফে ৬ টা রিলেশনশিপ (আর ৬ টা ব্রেকাপ)ট্রাস্ট মি তালাক দেয়ার প্রবনতা এই জন্যই বারছে। করেছেন না শিখেছেন সহনশীলতা না শিখেছেন ভালোবাসা শুধুই শিখেছেন ” উম্মা, যাও এখন আমার বাচ্চাটা ঘুমায়ে পরো তা, রাত জাগলে আমার পেটের বাবু আনহেলদি হয়ে পরবে।”
এদিকে পেটে কোন বাবুই নেই, সবই কাল্পনিক।
এরপর ফেব্রুয়ারী মাস ” টানা কয়দিন ভালোবাসা মূলক দিন, এই কয়েকটি দিনের মধ্যে সবচাইতে আনন্দের আর প্রেমিকাকে নিয়ে উন্মত্ত হয়ে উঠার দিন হচ্ছে ২১শে ফেব্রুয়ারি” ভাষা শহীদের স্মরণ না করে সবাই কাপল হিসেবে শহীদ মিনারের পিছের অন্ধকারকে কাজে লাগায়।
তার আগে অবশ্য ১৪ই ফেব্রুয়ারী আছে, যেদিন কিনা সকল আবাসিক হোটেলের রুম ঘন্টা চুক্তিতে ভাড়া পাওয়া যায়। আর ওষুধের দোকানে পরে যায় রোল। না আছে ত্যাগ, না আছে তাকে কাছে পাওয়ার দীর্ঘ অপেক্ষা, না আছে কোন শ্রদ্ধা,আগে কার দিনে প্রেম ছিল না বললে ভুল বলা হবে, হরমোনাল ক্রিয়া তো আর ওয়েষ্টার্ণ মুভি দেখে হয় নি। তবে আগে কার দিনে চাইলেই কেউ কাউকে কাছে পেত না,
বিয়ে ছিল তার একমাত্র উপায়, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর যখন কাছে পেত, তখন হায়রে কি আর স্তন কি আর ফর্সা শরীর, প্রেমিক প্রেমিকা দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরা মাত্র চোখের জলের বাধ ভেংগে যেত, কারন তারা এমন অনেক প্রেমের কথা জানত যার বিনাশ অংকুরেই হয়ে গেছে।
অবশ্যই তাদের ও যে কাম আকাঙ্ক্ষা ছিল না যে তা তো একেবারেই ভুল একটি কথা, তাছাড়া আপনার বাবা /মায়ের ৬-৭ ভাই বোন কিভাবে থাকে? কিন্তু তাদের অনুভূতি, আকাঙ্ক্ষা, প্রাপ্তি হাজার হাজার গুনে ভিন্ন ছিল। প্রনয় আকাঙ্ক্ষা যেখানে সীমিত,প্রিয়ার চকিত চাহনি সেখানে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতই লাগে।
” মামা ওর সাথে তো রিলেশনে গেছি,
আরে গুরু তাইলে এরও ভাইরাল হবে নাকি?,
: হলে তো তোরাই আগে পাবি নাকি?”
” দোস্ত ওই পোলা তো প্রপোজ করছে,
: বাট তোর না বিয়ে ঠিক হইছে, ওর না করে দিছিস?
: বিয়ের তো এখনো ৭ মাস দেরি আছে, এ কয়েকদিন এভাবে বসে থাকব? একটু মজা নেই, তারপর তো চিরটাকাল একজন নিয়ে কুতকুত খেলা লাগবে।
: তো এখন ওরে জানাবি না?
: আরে না, একটু বিরহের স্বাদ নেই না”
( হাসির রোল)
হাস্যকর,
আগের যুগে এমন ও কাহিনী শুনেছি, যে মেয়ে তার প্রিয়জন কে না পেয়ে গাছে দড়ি দিয়েছে, এখন প্রয়োজন মিটলে ফাইট ফট ফটাস।
আর ভেবে দেখুন যাকে ভালোবাসেন তার নগ্ন শরীরের ছবি অন্য পুরুষ্কে দেখাতে পারবেন? এটা হচ্ছে ” লিমিটের মধ্যে ভার্জিনিটি লস “
কারন শরীরের ভার্জিনিটি হয়, মনের ভার্জিটি মেজার করার ক্ষমতা আমাদের নেই।
যে সমাজে ধর্ষিতা নারীকে কেউ বিয়ে করতে চায় না, সেই সমাজে অন্য বউকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার হার বেশি।
আবার বাল্যবিবাহ যে সমাজে নিষিদ্ধ এবং এটা নিয়ে সব নীতিবানের সোচ্চার আন্দোলনের জোয়ারে ভেসে যায় দেশ, সেই সমাজে অবৈধ জারজ সন্তান এর রক্তাক্ত মৃত দেহ কে নিয়ে দুইটা কুকুর এর মারামারি লাগে ডাস্টবিনের পাশে।
খুবই হতাশাজনক, ভার্জিন্টি হারাতেই হবে
কারন এখন মজা না নিলে বিয়ের পর দায়িত্ব থাকবে, তখন কামের প্রকটতা তীব্রভাবে প্রকাশিত হতে পারবে না।
কখনো নিজের প্রিয় খাবার একবার খেয়ে আর কখনোই খান নি এমন হয়েছে?
নিজেই ভাবুন আর রিলেট করুন।
এই যুগের ভালোবাসা বীর্যপাতের সমানুপাতিক
প্রনয়কালে বীর্যপাত হয়ে গেল তো দুইজন দুই দিক ঘুরে শুয়ে পরল, শেষ।
কামরস এর নিষ্কাশনের প্রয়োজন ছিল তাই করা হলো, এখন আমিও বন্ধুদের দলে, গর্বিত ননভার্জিন।
দায়িত্ব নেয়া, কর্তব্যপরায়ণ হওয়া, এ যুগের প্রেম শেখায় না,
প্রেমিকাকে উপভোগ করে কখনো শান্তি নাই, উপভোগ স্ত্রী কে করো,প্রেমিকা রুপে তাকে নষ্ট নয়।
অনেকক্ষন না খেয়ে থেকে যা খাবে তাই ভালো লাগবে মুখে এটাই বাস্তবতা বলে।
আর প্রেমিকের টাকা দেখে প্রতিপত্তি দেখে,ফিউচার দেখে তাকে বরমাল্য দিও না।
বরমাল্য দিয়ে ওগুলো বানাতে সহায়তা করো।
কারন যে বিলে মাছ বেশি সে বিলে সব জেলেই জাল ফেলে, তাই বলে মাছ কোন এক জেলে একাই পায় না।
মহিম ভৌমিক
নব্যদীপ্তিশুদ্ধচিন্তায়_তারুণ্য