একটু গরিবদের সাহায্য করি
১৬ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বে ঘনবসতিপূণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্ব ব্যাংকের মতে ,বাংলাদেশের চরম দারিদ্রের হার ২০১৬ সালে ১২.৯ শতাংশ তে নেমে এসেছে।
দারিদ্রের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে স্হানীয় দূনীতি ও একটি অযোগ্য সরকার যেটি অবকাঠামো ও ভালো আইন গড়ে তুলতে অল্পই অবদান রেখেছে। গ্রামিণ দারিদ্রের একটা প্রধান কারণ হচ্ছে দেশের ভৌগলিক এবং জিন-তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য।আমাদের দেশে এত মানুষ ধনী তবুও তারা একটু গরিব দের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনা। কি হবে যদি নিজের অপ্রয়োজনীয় পরনের পোশাক একটি শিশুকে দিলে ।কত শিশু আছে মেধাবী কিন্তু টাকার অভাবে স্কুলে যেতে পারেনা। আবার কত মানুষ আছে খাবার -চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। কখনো এমন অসহায় মানুষদের দেখে মনে হয়, “আমরা অনেক সুখি। আল্লাহ না চাইতেই অনেক কিছু দিয়েছেন আমাদের”। বাবার সাথে প্রতিদিন সকালে হাঁটতে যাই। একদিন দেখলাম এই প্রচন্ড শীতের মধ্যে একজন মানুষ রাস্তায় শুয়ে আছে।গায়ে তার পরনের একটা ছেঁড়া গেঞ্জি আর একটি প্যান্ট। দেখে খুব খারাপ লাগলো তখন আমার ।তারপর বেশ কিছুদিন লক্ষ্য করলাম যেখানে হাঁটতে যাই সেখানে একজন পাগল মানুষ প্রতিদিন বসে থাকে আর যারা ওখানে হাঁটতে যায় তাদের বলে, ” ও মাসি অথবা ও কাকা বা ও মামুনি একটু টাকা দাও না আমি লেখাপড়া করতে চাই। স্কুল যেতে চাই।” কিন্তু সবাই তাকে নানাভাবে এরিয়ে যায় বা কেউ মিথ্যা বলে যে বাসায় যাওয়ার সময় দিবনি। জিনিসটা আমার খুব দৃষ্টিকটু লেগেছিল। আমি আমার বাবার থেকে টাকা নিয়ে যখন তাকে দিলাম,তিনি বললেন,” লেখাপড়া করে অনেক বড় হও মা”।আমরা চাইলেই এসব অসহায় দের পাশে দাঁড়াতে পারি কিন্তু এসব সম্পদশালী কিছু মানুষ গরিবদের মানুষ ই মনে করেনা ।একজন গরিব শিশু ও কিন্তু পড়ালেখা করে দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত হতে পারে। দারিদ্রের সাথে শিক্ষার সম্পর্ক বিপরীত ও দ্বান্দিক।সাধারণভাবে আমারা চারদিক তাকালেই এর সত্যতা চোখে পড়ে। আমরা দেখতে পাই যারা দরিদ্র তারাই অধিকাংশ হয়ে থাকে নিরক্ষর না হয় অল্পশিক্ষিত।শিক্ষা যত কম দারিদ্র তত বেশি।শিক্ষা বলতে আমি শুধু প্রবন্ধে স্কুল -কলেজের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বোঝাচ্ছি না। বোঝাচ্ছি প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম বিদ্যাশিক্ষা।একজন এম এ পাস করলেন মুখস্ত করে, কিন্তু তিনি ওই শিক্ষা কাজে লাগাতে অক্ষম, তাহলে তার সেই শিক্ষা বৃথা।তবে আরেকজন স্কুলে কোনদিন গেলেন না কিন্তু জীবনের অভিজ্ঞতার পাঠ নিয়ে সফলতার সঙ্গে সমাজে রাখছেন, তাকে আমি অশিক্ষিত বলব কি? সুতরাং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও মানুষ শিক্ষিত হতে পারে। তবে আমরা যদি এসব অসহায় দের পাশে দাঁড়াই তাহলে শুধু তাদের ই উপকার হবেনা। আমাদের সমাজ, আমাদের এই দেশটাও অনেক উন্নিতর দিকে এগিয়ে যাবে।কারণ এই গরিব দের মধ্যে থেকেই হয়ত কেউ দেশ পরিচালনা করছে আগামী দিনে বা কেউ দেশের মানুষ দের হয়ে কাজ করছে।আসুন আমরা নিজেদের নিচু মানসিকতা পিছিয়ে ফেলে এইবার বড় মনের পরিচয় দেই। এই গরিব -দুঃখিদের পাশে দাঁড়াই।
সামিয়া তাসনিম প্রেমা
“নব্যদিপ্তী- শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য