নব্যদীপ্তি_শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য

নারী দিবস আবার কি?

আজ ৮ই মার্চ, নারী দিবস। তাহলে বাকী ৩৬৪ দিন কি! পুরুষ দিবস? আজ দিনটি কি নারীদের নাকি পুরুষেরাও চাইলে পালন করতে পারবে? যদি না পারে তাহলে নারীদের দিন কি শুধু আজকেই, গতকাল ছিলনা? আগামিকাল থাকবেনা?

আমার মতে নারী দিবসের আলাদা কোন বিশেষত্ব নেই। আমাদের দেশে তো না ই। আচ্ছা বলুন তো এ দেশের কয়জন নারী জানে আজ নারী দিবস? কেন আজ নারী দিবস? নারী দিবসে কি করা হয় বা করতে হয়? উত্তর টা পাওনা থাকলো।

আজ শুধু কিছু শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের নারী দিবস। তাদের কাছে আজ কিছু লেখালেখি করা, বক্তৃতা দেওয়া, কবিতা আবৃত্তি করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেওয়া আর ভিডিও তৈরী করার দিবস। এই তালিকায় কিছু ভন্ড মানুষও আছে যারা রাস্তাঘাটে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সুযোগ বুঝে মেয়েদের টিজ করে, খারাপ মন্তব্য বা ইঙ্গিত করে তারাও আজকের দিনে “নারী দিবসের শুভেচ্ছা’ জানিয়ে নিজের মুখোশপরা সৎচরিত্র টা দেখায়।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫৪৬ জন নারী।
অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৪ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়াও যৌতুকের জন্য নির্যাতন কিংবা নিজ পরিবারের দ্বারা নির্যাতন ও একদিনের জন্য থেমে থাকেনি। তাহলে “নারী দিবস” নিয়ে এতো ঘটা কিসের এই দেশে? যেখানে প্রত্যেকদিনই কোন না কোন নারী ধর্ষণ কিংবা নির্যাতনের শিকার হয়?

শুধু আজকের দিনেই নারীদের সম্মান নিয়ে সবার চেতবাবোধ জাগ্রত হবে কিন্তু বাকী দিনগুলোতে যে সেই এমন নারী দিবসের কি দরকার বলুন তো? পুরুষজাতির কাছে আমার আবেদন প্রথমে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কাউকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর আগে নিশ্চিত করুন নারীরা আপনার কাছে নিরাপদ কিনা। মুখোশ ছেড়ে আসল মানুষ হোন। যে নারী আপনার মা, বোন, মেয়ে, সহধর্মিনী কিংবা সহযোদ্ধা তার প্রতি সদয় হোন, তাকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে শিখুন।

তাহলে আসল নারী দিবস কবে? নারীদের কাছে নারী দিবস প্রতিদিনই। তুমি নারী তুমি তোমার দিবস পালন করবে সেদিন, যেদিন তোমার পরিবার তোমার শিক্ষা অর্জনের মাঝখানে তোমার নারীত্বকে বাঁধা হিসেবে টেনে আনলে, পথে তোমার শরীরের দিকে কেউ কুদৃষ্টি দিলে, তোমায় দেখে অশালীন মন্তব্য করলে, তোমার কাছের কেউ তোমাকে খারাপ উদ্দেশ্যে ছুঁতে চাইলে, তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তোমার উপর কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাইলে, তোমাকে তোমার ইচ্ছামতো বেঁচে থাকতে না দিলে তুমি প্রতিবাদ করতে শিখবে সেদিনই হবে তোমার নারী দিবস।

ধর্ষণের শিকার, এসিড নিক্ষেপে ক্ষত-বিক্ষত, যৌতুক দিতে না পারায় ডিভোর্সি কিংবা সিঙ্গেল মাদার যেসব সংগ্রামী ও সাহসী নারীরা সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, বাঁধা উপেক্ষা করে আজ সফল ও সাবলম্বী তাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শুধু এই একদিনই যথেষ্ট নয়। তবুও বলবো আপনাদের সাহসিকতায় অনুপ্রানিত হয়ে প্রত্যেক মেয়ে যেনো সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করে সফল নারী হয়ে উঠতে পারে নারী দিবসে এটাই কাম্য থাকবে।

তাসনিয়া তাসনিম শ্রুতি
নব্যদীপ্তি_শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button