বগুড়া

বগুড়ায় ছাত্রলীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষে জেলা যুগ্ম সা. সম্পাদক তাকবির ইসলাম খানের মৃত্যু

অবশেষে মারা গেলেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগ নেতা তাকবির

বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাত ও মারপিটে আহত জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবির ইসলাম খান (২৫) মারা গেছেন। মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান।

ছবি: বগুড়া লাইভ
ছবি: বগুড়া লাইভ

গত ১১ মার্চ রাতে শহরের সাতমাথা এলাকায় এ হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছিলেন।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ খান জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, হার্টে আঘাত, নিতম্বে গুরুতর ছুরিকাঘাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে; পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ছোটভাই তৌফিকের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ হামলা সংক্রান্ত মামলায় হত্যার ধারা যোগ হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার ধুনটের শহীদ মিনার ও মুজিব মঞ্চ চত্বরে উপজেলা ছাত্রলীগ একই সময় সমাবেশের ডাক দেয়। এ নিয়ে সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ওই দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন। ধুনটে যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবির ইসলাম খানের মোটরসাইকেলের সঙ্গে জাহিদ হাসানের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে দুই নেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

ধুনট থেকে বগুড়া শহরে ফেরার পর রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ ও তার লোকজন জাহিদ হাসানের পক্ষ নিয়ে তাকবির হাসান ও তার সমর্থকদের সাথে দ্বিতীয় দফা বাকবিতণ্ডায় জড়ান।

একপর্যায়ে রউফের সমর্থকরা তাকবির ও তার পক্ষের লোকদের ওপর হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় তাকবিরকে ছুরিকাঘাত ও অন্যদের মারপিট করা হয়েছে। গুরুতর আহত তাকবির ইসলামকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত তাকবির সমর্থক বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী শান্ত, ইমন, সাজিদ ও হাবিব এবং রউফ গ্রুপের জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসান, ছাত্রলীগ কর্মী সানজিদ, দুলাল ও রাজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ সংঘর্ষের ঘটনায় গত ১৩ মার্চ দুপুরে বগুড়া শহরের মালতিনগর দক্ষিণপাড়ার জহুরুল ইসলাম দুলালের স্ত্রী ও তাকবিরের মা আফরোজা ইসলাম সদর থানায় ছাত্রলীগ সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

নামীয় অন্য আসামিরা হলেন- জাহিদ হাসান, আনোয়ার হোসেন, মো. তারেক, বিধান চন্দ্র মোহন্ত মো. নিশাদ ও মো. আরমান।

অপরদিকে ছাত্রলীগ কলেজ শাখার কর্মী সোহাগ হোসেন বাদী হয়ে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবির ইসলাম খানকে (নিহত) প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নামে ও অজ্ঞাত ২৫ জনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন। অন্য আসামিরা হলেন- তোফায়েল আহম্মেদ তোহা, হাসিবুল হাসান শান্ত, আবদুল্লাহ ইমন, জয় কুমার দাস, শাহাদত জামান সঞ্জয়, সামিউল পরান সজল, সিজান রহমান, ফেরদাউস আলম সাফি, নুরুল ইসলাম, মাহবুবুল হক সাফিন, হাবিবুর রহমান, মেহেদি হাসান ও অজ্ঞাত।

এজাহারে পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পনা অনুসারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। যদিও ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রউফ দাবি করেন, তিনি হামলার সঙ্গে জড়িত নন; সামনে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হতে চাওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button