জাতীয়বগুড়াশেরপুর উপজেলা

বগুড়া শেরপুরে তৈরী শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থান পেলো গিনেস বুকে

বগুড়ায় ১০০ বিঘা জমিতে ধানের গাছ দিয়ে তৈরি ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ নামে বিশ্বের সর্ববৃহৎ চিত্রকর্মটি গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্-এ স্থান করে নিয়েছে।

শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহবায়ক আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম জানিয়েছেন, ১০০ বিঘা বা ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে বঙ্গবন্ধুর ওই চিত্রকর্মটির বিশ্ব রেকর্ড করার কথা গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষ ১৬ মার্চ বিকেল পৌণে ৪টার দিকে ই-মেইলে নিশ্চিত করেছেন। এ সংক্রান্ত তথ্য গিনেজ বুকের ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে।


আয়োজকরা জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে গত বছর দেশজুড়ে জাকজমকপূর্ণ নানা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে যথাযোগ্য মর্যাদায় সেটি করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্ম আঁকার পরিকল্পনা করা হয়। এজন্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিমের নেতৃত্বে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়।


বিশাল ওই কর্মযজ্ঞটিতে অর্থায়নের জন্য এগিয়ে আসে দেশে কৃষি খাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার। এরপর স্থান হিসেবে প্রায় ৬ মাস আগে বেছে নেওয়া হয় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দ্রা গ্রামের ১০০ বিঘা ফসলি জমি। এরপর জমিগুলোকে চাষযোগ্য করে বিদেশ থেকে আনা বেগুনী রঙের ধানসহ দুই ধরনের ধান থেকে চারা উৎপানের জন্য বীজতলা তৈরী করা হয়।


বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্মটিকে ফসলের মাঠে ফুটিয়ে তুলতে কোন স্থানে কোন রঙের ধানের চারা কিভাবে এবং কতখানি জায়গা জুড়ে রোপন করতে হবে সেটা নির্ধারণে কাজে লাগানো হয় বাংলাদেশ ন্যশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) ১৮৫ জন সদস্যকে। তারা নির্দিষ্ট স্থানে বাঁশের খুঁটি পুঁতে স্থানগুলো চিহ্নিত করে। এরপর গত ১ ফেব্রæয়ারি কৃষকরা বিএনসিসি ক্যাডেটদের সহযোগিতায় ধানের চারা রোপন শুরু করেন। যা চলে ১৬ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত। অবশ্য এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি সেখানে চারা রোপন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।


চারা রোপনের ১ মাস ৯ দিনের মাথায় গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্-এর স্থানীয় দুই প্রতিনিধি গত ৯ মার্চ বগুড়ার শেরপুরের বালেন্দা ফসলের মাঠের সেই চিত্রকর্ম ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ পরিদর্শন করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দুই ঘন্টারও বেশি সময় ধরে পরিদর্শনকালে তারা স্থানীয় সরকারি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের মাধ্যমে পুরো জমির পরিমাপও নেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন বৃহৎ ওই চিত্রকর্ম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’-এর আহবায়ক আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম, সদস্য সচিব ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের কর্ণধার কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক ফয়জুল সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ।


পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দলের এক সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তারা পুরো চিত্রকর্মটি দেখেছেন। গিনেজ বুক থেকে যেভাবে বলা হয়েছিল সেভাবেই এটি করা হয়েছে। তাছাড়া এখানে কৃত্রিম কোন কিছুই ব্যবহার করা হয়নি। এমনকি জায়গার পরিমাপটিও সঠিক রয়েছে।’ সর্বশেষ গত ১৪ মার্চ কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ওই চিত্রকর্মটি পরিদর্শন করেন।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button