২৭১ রান করেও জেতা হলো না বাংলাদেশের

তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুনদের ব্যাটে বাংলাদেশ আজ তুলেছিল ২৭১। একটা রেকর্ডও অভয় দিচ্ছিল তামিম ইকবালের দলকে। এই মাঠে ২৬০ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ বোলিংয়ের শুরুতেও চেপে ধরেছিল নিউজিল্যান্ডকে, ৫৩ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মেহেদি হাসানরা। তবুও জেতা হলো না বাংলাদেশের।
ক্যাচ মিসের মহড়ায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারে তিন ম্যাচের সিরিজটাও হেরে গেলো বাংলাদেশ। শেষ ওয়ানডেতে জিততে না পারলে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফিরতে হবে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডে দলটিকে কখনোই হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ প্রথমে ২৭১ রান তুলে ফেলার পর ৫৩ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে মনে হচ্ছিল, ওই আক্ষেপ বুঝি ঘুচতে যাচ্ছে এবার। কিন্তু বাংলাদেশের ক্যাচ মিসের মহড়া আর টম লাথামের দারুণ এক সেঞ্চুরির কারণে সেটা আর সম্ভব হলো না।
ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুনের দুর্দান্ত অর্ধশতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রানের লড়াকু পুঁজি দাঁড় করা বাংলাদেশ। তামিম ৭৮ রান করে ফিরলেও মোহাম্মদ মিঠুন ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে নিউজিল্যান্ড।
দুই টাইগার পেসার মোস্তাফিজ এবং তাসকিন আহমেদের ওপর শুরু থেকেই চড়াও হন মার্টিন গাপটিল। তিন চার আর এক ছক্কায় ২৪ বলে ২০ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন গাপটিল। মোস্তাফিজের কাটারের কোনো জবাবই যেন ছিল না এই কিউই ব্যাটসম্যানের কাছে।
৮ম ওভারে প্রথম বল হাতে আসেন মেহেদি হাসান। ওই ওভারেই হেনরি নিকোলসকে বোল্ড করেন। আর পরের ওভারে এসে বোল্ড করেন উইল ইয়ংকে। আর তাতেই এক ওভারের ব্যবধানে দুটি উইকেট হারায় কিউইরা।
৯ম ওভারে বল হাতে আসেন গত ম্যাচে অভিষেক হওয়া তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান। দ্বিতীয় বলে মেহেদিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পরাস্ত হন হেনরি নিকোলস আর বল গিয়ে লাগে স্ট্যাম্পে। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় ১৮ বলে ১৩ রান করে ফেরেন নিকোলস।
চতুর্থ উইকেটে কিউই অধিনায়ক টম লাথামকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন ডেভন কনওয়ে। এই দুই ব্যাটসম্যান মিলে কিইদের জয়ের পথে আনেন। এই জুটি থেকে আসে ১১৩ রান। তবে ৩৪তম ওভারের তৃতীয় বলে ডেভন কনওয়ে ৭২ রানে রান আউট হন। টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবালের দুর্দান্ত থ্রোতে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় কনওয়েকে।
এর আগে তামিম ইকবাল এবং মোহাম্মদ মিঠুনের দুর্দান্ত অর্ধশতকে লড়াকু পুঁজি দাঁড় করায় টিম টাইগার্স। তামিম ৮৪ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। কিউইদের বিপক্ষে এটি তামিমের ষষ্ঠ একদিনের আন্তর্জাতিক অর্ধশতক। ৫০ পূর্ণের পর হাত খুলে খেলতে শুরু করেন তামিম। দুর্দান্ত শট খেলে রানের চাকা সচলও রেখেছিলেন। এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথেই। তবে বিধিবাম হয়ে দাঁড়াল রান আউট। ৩১তম ওভারে জেমস নিশামের দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে ফেরার আগে ১০৮ বলে ১১টি চারে ৭৮ রান করেন তামিম। আর দলীয় স্কোরবোর্ডে রান সংখ্যা তখন ১৩৩ রান।
এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের দুর্দান্ত এক ইনিংস। অর্ধশতক তুলতে মিঠুন খেলেন ৪৩টি বল। এর আগে ২৮টি ওয়ানডে খেলে মিঠুনের অর্ধশতক ছিল ৫টি। যেখানে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ৬৩ এর। কিউইদের বিপক্ষে এদিন মিঠুন খেলেন অপরাজিত ৭৩ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। আর তাতেই টাইগারদের লড়াকু সংগ্রহ।
কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার। আর একটি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি আর কাইল জেমিসন। তাতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭১ রানের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৭১/৬; ৫০ ওভার; (তামিম ৭৮, লিটন ০, সৌম্য ৩২, মুশফিক ৩৪, মিঠুন ৭৩*, মাহমুদউল্লাহ ১৬, মেহেদি ৭, সাইফউদ্দিন ৭); (স্যান্টনার ১০-০-৫১-২, বোল্ট ১০-০-৪৯-১, হেনরি ১০-৩-৪৮-১, জেমিসন ১০-২-৩৬-১)