শ্রমিকদের অধিকার কোথায়
দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, কিন্তু কিছু মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়না! এই ধরুন,রিকশাচালক, দাড়োয়ান, কিংবা গার্মেন্টস কর্মী আজীবন ঐ একইভাবে জীবিকা নির্বাহ করে। কি আশ্চর্য,তাই না?
এসব মানুষের জীবন এভাবেই কেটে যায়।আমাদের এই সমাজে, ধনীক শ্রেণিরা শ্রমিকদের খাটিয়ে, একটি থেকে আরো চার -পাঁচটি নতুন কারখানা বা,গার্মেন্টস তৈরি করছে। আর যাদের মাধ্যমে ব্যবসায় এই লভ্যাংশ আসছে তাদের কপালে দুর্ভোগের শেষ নেই! অথচ বিশালাকার লভ্যাংশের সামান্য অংশ শ্রমিকদের খাতে ব্যয় করলে,তাদের জীবিকার মান সামান্য হলেও উন্নত হতো। কিন্তু তা হয়নি!
১লা মে – আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস৷ কবে থেকে শুরু হলো মে দিবস পালন৷ চলুন,একটু পেছনে ফেরা যাক৷ ১৮৮৬ সালের ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটের সামনে দৈনিক কাজের সময় আট ঘণ্টার দাবিতে হাজারো শ্রমিক জড়ো হয়েছিলেন৷ এ সময় পুলিশ শ্রমিকদের উপর অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে৷ আর ১০-১২ জন নিরীহ শ্রমিক সেখানেই মারা যান৷
১৮৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়৷ সেখানে ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগো প্রতিবাদের বার্ষিকী আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে পালনের প্রস্তাব করেন রেমন্ড লাভিনে৷ ১৮৯১ সালে এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়৷
তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রমজীবী মানুষ মে মাসের ১লা তারিখকে সরকারি ছুটির দিন হিসাবে পালনের দাবি জানায় এবং অনেক দেশে এটা কার্যকরও করা হয়৷ বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে ‘পহেলা মে’ জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ধার্য্য করা হয়েছে৷ এতকিছুর পরেও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে কি?? এ বিষয়ে রাস্ট্রীয় পদক্ষেপের বিকল্প নেই!
এদেশে সামান্য হরতাল, লকডাউনেও শ্রমিকদের ঘরে বসে একটা দিনের আহার জোটানো দায়! তাই বার বার শত বাধা দিলেও এসব মানুষকে ঘরে আটকে রাখা যায় না। তারা জীবিকার তাগিদে বার বার বেড়িয়ে পড়ে। কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় লকডাউন দিলেও, শ্রমিকরা এটার বিপক্ষে নামে। গতবছরের ন্যায় তাই ত্রাণ নিয়ে কেলেংকারী না ঘটিয়ে,এবছর শ্রমিক শ্রেণির ত্রাণ পাওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারলে, তবেই দীর্ঘ মেয়াদি লকডাউন দেয়া শ্রেয়!
নূরানী ইসলাম নিসা
নব্যদীপ্তি_শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য