আইন ও অপরাধ

বগুড়ায় মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী হত্যাকাণ্ডে কথিত সাংবাদিক গ্রেফতার

বগুড়ার শাজাহানপুরে মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী জয়নাল আবেদীনকে (৭০) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তানভিরুল ইসলাম (২১) নামের কথিত এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শাজাহানপুর থানা পুলিশ শুক্রবার বিকেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথমে আটক করে। পরে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়৷

তিনি ওই উপজেলার সাজাপুর উত্তরপাড়ার মিঠু মিয়ার ছেলে ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত কথিত দৈনিক মাতৃভূমির খবর নামের একটি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ও মিডিয়া মুখপাত্র) ফয়সাল মাহমুদ।

পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কথিত সাংবাদিক তানভিরুল গাঁজা সেবন করার জন্য মাদ্রাসার বারান্দায় যায়৷ সেই সময় নিহত জয়নাল তাকে বাঁধা দিলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এরপর ওই নৈশ প্রহরী তার ঘড়ে ঘুমাতে গেলে তানভিরুল জয়নালকে পেঁটে ও গলায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে পালিয়ে যায়৷

শুক্রবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে গেলে তানভিরুল সংবাদ সংগ্রহের বাহানায় ঘটনাস্থলে ঘোরাঘুরি করতে থাকে৷ একপর্যায়ে সে অতিউৎসাহী হয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে ও অন্য তিনজন মাদকসেবীর নাম দেয়। ওই সময় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে তানভিরুলও একজন মাদকসেবী ঘটনাস্থলে সে মাদক সেবন করতে আসতো। পরে পুলিশ তার উপরে সন্দেহ হলে তাকে সহ ওই তিনজনকে নিয়ে এসে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। একপর্যায়ে সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সব বলে দেয়।

পরদিন শুক্রবার (২৮ মে) নৈশ প্রহরী খুনের খবর জানাজানি হলে গ্রামের লোকজনের সাথে মাদরাসায় মরদেহ দেখতে যান তানভির। তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গলায় আইডি কার্ড ঝুলিয়ে মরদেহের ভিডিও ধারণ শুরু করেন। সেখানে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিকরা তথ্য নিয়ে চলে গেলেও তানভির পুলিশের পিছু ছাড়ছিলেন না। তিনি সকল কর্মকাণ্ড ভিডিও ধারণ করছিলেন। বেলা ৩টার দিকে পুলিশের আরেকটি দল মাদরাসা চত্বরে গেলে তানভির সেখানে উপস্থিত হয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকার কয়েকজন মাদকসেবীর নাম ঠিকানা দিয়ে পুলিশকে জানায় তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে। তানভীরের অতি উৎসাহী আচরণে পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয়। পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ আরও তিন যুবককে আটক করেন। রাতে পুলিশ চারজনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তানভীর হত্যার সাথে নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল আরও জানান, তানভিরুল মূলত মাদকসেবী। সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানারকম অপকর্ম চালাতো। রাতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তিনি আরও জানায়, গতকাল নিহতের ছেলের করা অজ্ঞাতনামা মামলায় আমরা তানভিরুলকে আদালতে পাঠিয়েছি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button