শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান বিএনপি’র
অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
শনিবার সংবাদমাধ্যমে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে এক বিবৃতি পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়- প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মন্তব্য নিম্নমানের মিথ্যাচার, বিভ্রান্তিকর এবং জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করবার অপচেষ্টা। এ সময় সভা থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানায় বিএনপি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়- সকল স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের দ্বিতীয়তে। দীর্ঘসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষাস্তর পর্যন্ত চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় আরো বলা হয়- রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়ের চার বছর অতিক্রম করার পরও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবসনের কোনো ব্যবস্থা করতে না পারায় সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করা হয়।
সভায় নেতারা বলেন, সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবসনে কার্যকারী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে বাংলাদেশের পক্ষে আনা সম্ভব হয়নি। চীনের মধ্যস্থতাও ব্যর্থ হয়েছে। ভারত এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী ভূমিকা রাখেনি। জাতিসঙ্ঘকে কোনো ফলপ্রসূ উদ্যোগ গ্রহণ করানোর ক্ষেত্রেও সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে একথা মনে করা অসংগত হবে না যে সরকার নিজেরাই এই সমস্যার সমাধান করতে চায় না। আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা সমস্যাকে অগ্রাধিকারের পর্যায়ে আনতে পারেনি সরকার। অথচ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সরকার ও বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের সময়ে কূটনৈতিক সাফল্যের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছিল। এ সময় বিষয়টি নিয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানান তারা।
এ দিকে কাবুল বিমানবন্দরে আইএসআইএল-কে সন্ত্রাসীদের বোমা বিস্ফোরণে প্রায় ২০০ জন বেসামরিক আফগান নাগরিক ও ১৩ জন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান সভায় উপস্থিত নেতারা। তারা বলেন, সমগ্র বিশ্ব যখন আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রত্যাশায় তখন এই ধরনের বোমা বিস্ফোরণ আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। বিএনপি সব সময়ই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরোধী রাজনৈতিক দল। এ সময় সভায় নিহতদের রূহের মাগফিরাত ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদানা জানানো হয়।
অন্য দিকে সভায় করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় নেতারা বলেন, পর্যাপ্ত মজুদ না রেখে আবারো টিকা কর্মসূচি শুরু করা সরকারের আরেকটি ভুল সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে বিএনপি বারবার টিকা সংগ্রহের বিষয়টিকে সর্বাধিক প্রাধ্যান্য দিয়ে কার্যকরী ব্যবস্থাগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু সরকার জনগণকে প্রতারণা ও মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ সময় টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানায় দলটি।
এ সময় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, জনাব নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।