প্রধান খবরবগুড়া সদর উপজেলা

বগুড়ায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষন চেষ্টা! মুদির দোকানি গ্রেফতার

বগুড়ায় চকলেট ও বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে ধারাবাহিকভাবে শিশুদের যৌন নিপীড়ন চালিয়ে আসছিল আলমগীর হোসেন রাজা নামে ৫২ বছর বয়সী এক দোকানি। এ পর্যন্ত সে ৮ থেকে ১১ বছর বয়সী ৫ কন্যা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। তবে তার শেষ রক্ষা হয়নি। সদর থানা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের নিশিন্দারা ধমকপাড়া এলাকায় বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় যৌন নিপীড়নের শিকার এক শিশুর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন রাজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। নির্যাতনের শিকার শিশুদেও বয়স ৯ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। তারা গ্রেফতার রাজার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে জবানবন্দী দিয়েছে। তাতে তারা বলেছে যে, দোকানে কেনা-কাটা করতে গেলেই আলমগীর হোসেন রাজা বিভিন্ন সময় তাদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালায়।

বগুড়া সদর থানার নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর জেবুন নেছা জানান, সর্বশেষ যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে ৪ দিন আগে দুপুর বেলা। সেদিন এক শিশু মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজার দোকানে শ্যাম্পু কিনতে যায়। তখন ওই দোকানি শিশুটিকে দোকানের ভেতরে গিয়ে শ্যাম্পু নিতে বলে। সরল বিশ^াসে শিশুটি দোকানের ভেতরে যেতেই দোকানি আলমগীর হোসেন রাজা দরজা বন্ধ করে তার পরনের কাপড় খুলতে শুরু করে। এতে শিশুটি বাধা দিলে দোকানি তাকে চাকু দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। অনেক পীড়াপীড়ির পর শিশুটি ছাড়া পেয়ে বিষয়টি তার মাকে গিয়ে বলে। এরপর ওই শিশুর মা মঙ্গলবার বিকেলে থানায় গিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মুদি দোকানি আলমগীর হোসেন রাজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর পরই অভিযুক্ত মুদি দোকানীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হয়। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের নিশিন্দারা ধমকপাড়া এলাকায় বাড়ি থেকে মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজাকে গ্রেফতার করা হয়।

সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, মুদি দোকানীকে গ্রেফতারের পর পরই আরও ৪ শিশুর মা তাদের শিশুদের নিয়ে থানায় আসেন। এরপর সেই ৪ শিশুও মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করে। পরে ২২ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীতে তারা জানায়, কোরবাণীর ঈদের পর থেকে ওই মুদি দোকানী শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। শিশুরা জানায়, সকালে নয়তো দুপুরে যখন মানুষের যাতায়াত কম থাকে তখন পণ্য কিনতে দোকানে গেলেই দোকানী আলমগীর হোসেন রাজা কৌশলে তাদেরকে কাছে টেনে নিয়ে যৌন নিপীড়ন চালাতো। অসভ্য ওই আচরণের কথা কাউকে যাতে না বলা হয় সেজন্য তিনি দোকানে রাখা ছুরি দিয়ে হত্যার হুমকিও দিতেন।

ভুক্তভোগী শিশুদের মায়েরা জানিয়েছেন তাদের মেয়েদের ওপর বিভিন্ন সময় মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজার যৌন নিপীড়নের খবর তারা জানতে। কিন্তু ভয় আর লোক লজ্জার কারণে তারা বিষয়টি গোপনেই রেখেছিলেন।

পাঁচ শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আলমগীর হোসেন রাজাকে গ্রেফতার করে আজ তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button