বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সূর্যকে স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে “নাসা’

ইতিহাস সৃষ্টি করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। প্রথমবারের মতো সূর্যকে স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে সংস্থাটির ‘পার্কার’ নামক নভোযান। 

সূর্যের বলয়ের নাম করোনা। আর সেখানেই প্রবেশ করেছে নাসার এই নভোযান। ‘দ্য পার্কার সোলার প্রোব’ হচ্ছে ‘সূর্য স্পর্শ’ করার অভিযান। অবশেষে বাস্তবে সেটাই ঘটেছে। পার্কার মহাকাশযান সূর্যের করোনাতে প্রবেশ করতে পেরেছে। এই প্রথম এমন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ প্রথম কোনো মহাকাশযান সূর্যের বলয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে।

সূর্য এতদিন অধরা ছিল মানবজাতির কাছে। পৃথিবীতে তৈরি কোনো মহাকাশ যান তো পরের কথা, কোনো বস্তুই ছুঁয়ে দেখতে পারেনি সূর্যকে। আর সেই অসাধ্য সাধন করল দ্য পার্কার সোলার প্রোব। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সূর্য জয়ের এই ইতিহাসের কথা ঘোষণা করেছে নাসা। শুধু স্পর্শ করাই নয়, সেখানকার নমুনাও সংগ্রহ করেছে এই মহাকাশযান। 

নাসার এই মহাকাশযান সূর্যের করোনা অঞ্চলে প্রবেশ করার পর অতিরিক্ত তাপ এবং বিকিরণ বা রেডিয়েশনের মুখোমুখি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পার্কার যেখানে পৌঁছেছিল সেখানে উত্তাপ দুই মিলিয়ন কেলভিন। অর্থাৎ, ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭২৬.৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এমন উত্তাপে সেকেন্ডে একশ কিলোমিটার বেগে করোনার ভেতর তথ্য সংগ্রহ করেছে পার্কার।

সূর্যকে স্পর্শ করার ফলে সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই নক্ষত্রের পৃষ্ঠদেশের নানা তথ্য জানা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। পার্কার মহাকাশযানটি করোনা এলাকায় তিনবার চক্কর দিয়েছে। নাসার হেলিপোফিজিক্স সায়েন্স ডিভিশনের ডিরেক্টর নিকোলা ফক্স জানিয়েছেন, সূর্যকে স্পর্শ করতে পারার এ ঘটনা মানজাতির জন্য বিশাল একটা সাফল্য।

সূর্যের রহস্য ভেদের জন্য নাসা ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে উৎক্ষেপণ করে অত্যাধুনিক মহাকাশযান ‘পার্কার সোলার প্রোব’। সূর্যের উদ্দেশ্যে মহাকাশযানটিকে সাত বছরের জন্য পাঠানো হয়েছে। করোনা এলাকার ভয়ঙ্কর তাপমাত্রার হাত থেকে মহাকাশযানটির ভেতরে থাকা যন্ত্রাংশগুলোকে বাঁচানোর জন্য এতে রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী ‘হিট শিল্ড’। রয়েছে বিশেষ প্রযুক্তিতে বানানো স্বয়ংক্রিয় কুলিং সিস্টেমও। সৌর বায়ু পরিমাপ করার জন্য এতে রয়েছে সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি। এছাড়া এর বিস্ময়কর হুইসপার নামক যন্ত্রটি সৌর তরঙ্গের ছবি তুলতে সক্ষম।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পার্কার সূর্যের চারপাশে চক্কর কাটতে থাকবে। এরপর করোনা ভেদ করার চেষ্টা করবে। সূর্যের আরো গভীরে পৌঁছাবে ২০২৫ সালে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button