বগুড়ায় ভুয়া ইউএনও গ্রেফতার

ইউএনও পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলায় জরিনা বেগম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে ভুক্তভোগীর স্বামী বিপ্লব দাস গাবতলী থানায় অভিযোগ দিলে বিকাল ৩টায় পুলিশ জরিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। জরিনা বেগম গাবতলী উপজেলার তেরপাখী গ্রামের বিকুল হোসেনের স্ত্রী।
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এবং ঘর নির্মাণের কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, প্রতারক জরিনা বেগম ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নিজের নাম দীপ্তি রানী এবং নিজেকে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসে মাস্টার রোলে অফিস সহকারী পদসহ বিভিন্ন পদে চাকরি এবং ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি গাবতলী উপজেলার ৮ জন নারীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
প্রতারণার শিকার উপজেলার নিশ্চিন্তপুরের বিনা রানীর স্বামী বিপ্লব দাস জানান, তার স্ত্রী শিক্ষিত। অনেক দিন থেকেই চাকরির চেষ্টায় বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করে আসছিল। এরই মধ্যে একদিন তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে জরিনা বেগম নিজেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে তার অফিসে মাস্টার রোলে অফিস সহকারী পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সেজন্য তাদের এক লাখ টাকা দিতে হবে। ওই টাকা গ্রহণের জন্য তিনি নিজের বিশ্বস্ত ব্যক্তি জরিনা বেগমকে পাঠাবেন। তার হাতে টাকা বুঝিয়ে দিলেই হবে। এরপর তিনি ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর জরিনার হাতে ৪০ হাজার টাকা দেন। এর এক মাস পর নগদের মাধ্যমে বাকি ৬০ হাজার টাকা পাঠান।
সেসময় জরিমানা বেগম জানান তিন মাসের মধ্যে তার স্ত্রীর চাকরি হবে। এরপর তিন মাস পর ইউএনও অফিসে গিয়ে তার স্ত্রী জানতে পারে দিপ্তি রানী নামে কোনো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে নেই। পরে তারা বুঝতে পারে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এ বিষয় নিয়ে এলাকার লোকজন জানাজানি হলে জরিনার কাছে প্রতারণার শিকার হওয়া আরও ৭ জন নারীর কথা বেরিয়ে আসে। চাকরি এবং ঘর নির্মাণের কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানতে পারেন। পরে তাদেরকে সাথে নিয়েই তারা গাবতলী থানায় অভিযোগ দিতে আসেন।
গাবতলী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জামিরুল ইসলাম বলেন, প্রতারনার স্বীকার নেপালতলী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বিজয় চন্দ্র রায়ের ছেলে বিপ্লব দাস বাদী হয়ে জরিনা আকতারকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃত জরিনাকে আজ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।