জাতীয়দুর্ঘটনাপ্রধান খবর

ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৬

ঈদুল ফিতরের ঈদযাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৮৪৪ জন।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানানো হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ৪০২টি দুর্ঘটনায় ৪৪৩ জন নিহত ও ৮৬৮ জন আহত হয়েছে।

সমিতির মহাসচিব মোজ্জাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় ২৫ লাখ মোটরসাইকেল ও ৪০ লাখ ইজিবাইক রাস্তায় নামে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার উল্লেখযোগ্য তৎপরতার কারণে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়ক দুর্ঘটনা বরাবরের মতো বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২৬ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১০ মে পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৬ জন নিহত ও ৮৪৪ জন আহত হয়েছেন।

২০২১ সালের ঈদুল ফিতরে যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১৪.৫১ শতাংশ, নিহত ২২.৩৫ শতাংশ ও আহত ২৬.৩০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে রেলপথে ২৭ ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৩টি দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।

বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে মোটরসাইকেল। এবার ১৬৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৫ জন নিহত ও ১১০ জন আহত হয়েছেন, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৪.০৮ শতাংশ, নিহতের ৩৪.৮৫ শতাংশ ও আহতের ১৩.০৩ শতাংশ প্রায়।

দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৩৮.৭৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৫.৪৯ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৮.৪৫ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৫.২৩ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ৮.৮৫ শতাংশ অটোরিকশা, ৫.৪৩ শতাংশ ব্যাটারি চালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল ও ১৭.৯০ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল। 

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৩.৮৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৪.৩৫ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৩.৪৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪.৮৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২.৪১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সমিতির সুপারিশ

জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ত্রুটি সারানোর উদ্যোগ গ্রহণ; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা। এছাড়া ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করা; গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা দরকার।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button