তথ্য ও প্রযুক্তি

ই-সিম কী? কীভাবে কাজ করে এবং এর সকল সুবিধা ও অসুবিধা কী ?

👉 ই-সিম (E-SIM) নামটা অনেকেই হয়তো নতুন শুনছেন যদিও এটা অনেক আগেই বের হয়েছে। বিভিন্ন দেশেও এই সিম সেবা চালু রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও ই-সিম সেবা চালু করছে। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এর দিন ই-সিম নামে নতুন আরেকটি সিম সেবার যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ই-সিম লঞ্চ হওয়ার পর থেকেই সবার মাঝে একটা কৌতূহল তৈরী হযেছে যে ই-সিম কী ? এটা কিভাবে কাজ করে বা এর সুবিধা অসুবিধা কী ? তাই যদি আপনার মনেও একই রকম প্রশ্ন জেগে থাকে এবং ই-সিম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিক্যালটি আপনার জন্য। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিক্যালটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

👉 ই-সিম (eSIM) কী?
কীভাবে কাজ করে এবং এর সকল সুবিধা-অসুবিধা।

বর্তমানে সিমের সাইজ দিন দিন ছোট হচ্ছে। একটা সময় মিনি সিমকার্ডই চলতো দিন দিন আপগ্রেড হয়ে তা আস্তে আস্তে ছোট হতে লাগলো। বর্তমানে আমরা মিনি সিমকার্ডের চেয়ে মাইক্রো কিংবা ন্যানো সিমকার্ড ব্যবহার করতেই আমরা এখন অভ্যাস্ত হয়ে পড়ছি। বর্তমানে বেশিরভাগ ফোনেই ন্যানো সিম ব্যবহার করা হয় এরপরও আমরা দুইটা ন্যানো সিমের জন্য স্মার্টফোনে বা স্মার্টওয়াচে যতোটুকু জায়গা এখন দরকার হয়, সেটা আরো কমিয়ে আনতে পারলে জায়গাটা আরও ভালোভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে। এই চিন্তা ভাবনা থেকেই মূলত ই-সিমের আবির্ভাব হয়।

ই-সিম শুধু ডিভাইস তৈরীকারীদের জন্যই সুবিধা বয়ে আনবেনা , ব্যবহারকারীদের জন্যও ই-সিম নানা সুবিধা প্রদান করবে। তাই, বলা-ই যায় বর্তমান এই প্রযুক্তির সময়ে সাধারণ সিমকার্ডের যুগ সমাপ্তি টেনে ই-সিম হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, একথা এখন জোর দিয়েই বলা যায়। তো বন্ধুরা চলুন এবার জেনে নিই, ই-সিম সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সাধারণ সিমকার্ডের চেয়ে ই-সিম কতোটুকু আমাদের সুবিধা দিবে বা ই-সিম কিভাবে কাজ করে।

👉 ই-সিম কী (What is eSIM) ?

ই-সিম (eSIM) হচ্ছে এক ধরণের উন্নত প্রযুক্তির সিম বা এমবেডেড সিম । এমবেডেড শব্দটির সুন্দর কোন বাংলা শব্দ পাওয়া যায়নি তাই এই আর্টিক্যালে এমবেডেড শব্দটিই ব্যবহার করলাম।

এমবেডেড সিমে যদিও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু এর মূল কাজ প্রচলিত সিমকার্ডের মতই । সেই হিসেবে আমরা একে প্রচলিত সিমকার্ডের প্রতিস্থাপক বা আপগ্রেড ভার্সন বলতে পারি । তবে এর মধ্যে সব থেকে বড় পার্থক্য হচ্ছে প্রচলিত সিমকার্ডের মতো এমবেডেড সিম আলাদা করে খোলা বা লাগানোর কোন সুযোগ নেই।

ই-সিম প্রচলিত ব্যবহৃত ন্যানো সিমের চেয়েও আরো অনেক ছোট। এটি অন্যান্য সিমের মত নয় এটা একধরণের কানেক্টিং চিপ হিসেবে এটি সাপোর্টেড ডিভাইসের মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত করা হয় ডিভাইস তৈরীর সময়ই। তাই এটা খুলা বা লাগানোর কোন সুযোগ থাকছে না। সেই হিসেবে এটাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল সিমকার্ডও বলা যেতে পারে।

◾ কীভাবে কাজ করে এবং এর সকল সুবিধা-অসুবিধা।

👉এতটুকু পড়ার পরে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন জাগতে পারে যে তাহলে অন্যান্য কোম্পানির সিম কি ব্যবহার করা যাবে না ? বা নাম্বার চেঞ্জ করা বা একাধিক কোম্পানির সিমকার্ড একত্রে ব্যবহার করা যাবে কিনা। আসল কথা হল ব্যবহার করা যাবে না কিন্তু দুশ্চিন্তারও কিছু নেই। ই-সিম যুক্ত ডিভাইসে আগামীর দিনগুলোতে সাধারণ সিমকার্ড ব্যবহারের মতো কোন স্লট দেওয়া হবে না । তবে সেটা নিয়ে টেনশনের কিছু নেই।

কারণ, e-Sim যুক্ত ডিভাইসে সিমকার্ড পরিবর্তন করা না গেলেও আপনি ই-সিমের সাহায্যেই যে কোন অপারেটর এবং নাম্বার পরিবর্তন করার সুযোগ পাবেন । একই সাথে একাধিক নাম্বার বা ডুয়েল সিম একসাথে ব্যবহারের কাজটিও ই-সিমের মাধ্যমে করতে পারবেন। এবং সেটা আরো সহজ হবে বলে জানা যায়।

ই-সিম (e-Sim) ফিজিক্যালি বা দেখতে সাধারণ সিমকার্ডের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও প্রযুক্তিগত দিক থেকে দুইটা কিন্তু একইভাবে কাজ করবে। অর্থাৎ সাধারণ সিমকার্ড যেভাবে কাজ করে ঠিক একই ভাবে ই-সিম ও জিএসএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেই কাজ করে।

👉 ই-সিম এর পূর্ণরূপ কি?
e-Sim Full form
ই-সিম বা এমবেডেড সিম এর পূর্ণরূপ হল এমবেডেড সাবস্ক্রাইবার আইডেনটিটি মডিউল (Embedded Subscriber Identity module)

E= Embedded

S= Subscriber

I = Identity

M = module

তবে ই-সিম এমবেডেড সিম নামেই পরিচিত।

আপনি কি এখন ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন?
আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন তাহলে এই মুহূর্তে আপনার কাছে যদি ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইস থাকে তাহলে আপনি এখনো ব্যবহার করতে পারবেননা। গত ১৬ ই ডিসেম্বর ২০২১ বিজয় দিবসে বাংলাদেশে ই-সিম সেবা চালু হয়।

বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশেই এখন ই-সিম সেবা চালু রয়েছে। তাই, আপনি সেসব দেশে এধরণের কোন অপারেটরের গ্রাহক হয়ে থাকেন এবং আপনার কাছে ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইস থাকে তাহলে আপনি এই মুহূর্তে ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন কোন সমস্যা হবে না।

বর্তমানে ই-সিম সাপোর্টেড যেসব ডিভাইস রযেছে সেগুলোতে ই-সিমের পাশাপাশি সাধারণ সিমকার্ডের জন্য স্লট রাখা আছে এর কারণ এখনো ভালভাবে সব দেশে এই ই-সিম সেবা চালু হয়নি । তাই আপনি যে কোনটাই এখন ব্যবহার করতে পারবেন।

👉 বাংলাদেশে কি ই-সিম ব্যবহার করা যাবে?

যদিও বাংলাদেশে এই ই-সিম সেবা চালু হয়েছে তবে সব অপারেটর এখনো চালু করেনি। দেশে প্রথমবারের মত ই-সিম সেবা চালু করলো #গ্রামীনফোন।

গ্রামীণফোনের ওয়েবসাইটে একটা তথ্যে বলা হয়েছে, গ্রাহকরা এখন থেকে নতুন সিম কার্ড কিনতে অথবা ব্যবহৃত নম্বরটি ই-সিম হিসেবে প্রতিস্থাপন করতে পারবে। আগামী ৭ মার্চ থেকে গ্রাহকরা ই-সিম সংগ্রহ করতে পারবেন। অন্যান্য অপারেটর ও খুব শীঘ্রই চালু করবে।

👉 কোন কোন ফোনে ই-সিম সেবা চালু রয়েছে?
১। আইফোনঃ আইফোন ১৩ সিরিজ, আইফোন ১২সিরিজ, আইফোন ১০আর, আইফোন ১০এস ও আইপ্যাড প্রো।

২। স্যামসাংঃ স্যাসসাং এর গ্যালাক্সি এস২১ সিরিজ, এস২০ সিরিজ, গ্যালাক্সি ফোল্ড, জি ফ্লিপএবং নোট ১০ এর সকল ভার্সন।

৩। গুগল পিক্সেলঃ গুগল পিক্সেল ৬ সিরিজ, পিক্সেল ৫ সিরিজ, পিক্সেল ৪ সিরিজ, পিক্সেল ৩ সিরিজ।

৪। মটোরোলাঃ মটোরোলা রেজার (কোনো সিম স্লট নেই, শুধু ই-সিম রয়েছে)

যেসব স্মার্ট ওয়াচে ই

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button