‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের মা, কিন্তু তিনি আমাদের দুঃখটা বুঝলেন না’
চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকদের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
তবে মাত্র ৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধিতে খুশি নন সিলেটের চা শ্রমিকরা।
দৈনিক মজুরি মাত্র ৫০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিক মলয় গোয়ালা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের মা। কিন্তু তিনি আমাদের দুঃখটা বুঝলেন না। মাত্র ৫০ টাকা বৃদ্ধিতে আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না। ’
তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ১৮ দিন ধরে আন্দোলন করছেন। এই সময়ে তারা বাগানে কাজও করেননি। ফলে দৈনিক মজুরি ও রেশন না পেয়ে তারা খাদ্য সংকটে ভুগছে। এ অবস্থায় দৈনিক মজুরি ৫০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা শুনে খুশি হতে পারেননি সাধারণ শ্রমিকরা।
তবে চা শ্রমিক নেতারা বলছেন, ‘আমাদের দাবি ছিল দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা। পাশাপাশি আমরা এটাও বলেছিলাম প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটা আমরা মেনে নিব। তাই এখন প্রধানমন্ত্রীর কথামতো আমরা কাজে ফিরে যাবো।’
এদিকে কাজে ফেরার ব্যাপারে রবিবার (২৮ আগস্ট) সকালে সিলেট ভ্যালির সকল বাগানের শ্রমিকরা বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের পর তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন চা শ্রমিক ফেডারেশন নেতা অজিত রায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল ৩০০ টাকা। এখন বলা হচ্ছে ১৭০ টাকা দেওয়া হবে। বর্তমান বাজারে এই অল্প টাকায় শ্রমিকের কষ্ট-দুর্ভোগ দূর হবে না। তাই আলোচনা করেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। ’
তবে চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা সেটা মেনে নেব। তাই, প্রধানমন্ত্রীর কথামতো আজ থেকেই আমরা কাজে যোগ দেব। ’
শ্রমিক অসন্তোষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আছে তাদেরকে কোনো কিছুতেই খুশি করা যাবে না। ’
মালনীছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত নেতা সুফল বাড়ৈ বলেন, ‘১৭০ টাকায় আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা ৩০০ টাকা চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী অন্তত ২০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলে আমরা খুশি হতাম। কোনমতে জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো। ’