বগুড়ায় উপজেলা পর্যায়ে জিন এক্সপার্ট মেশিনে মাত্র ২ ঘন্টায় যক্ষ্মা পরীক্ষা

বগুড়ায় উপজেলা পর্যায়ে জিন এক্সপার্ট মেশিনে কফ পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে। যক্ষ্মা নির্ণয় প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
উন্নতমানের এই পরীক্ষার মাধ্যমে মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে এ পর্যন্ত ৭টিতে জিন এক্সপার্ট মেশিনে কফ পরীক্ষা চালু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) উদ্যোগে বগুড়ায় সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক অ্যাডভোকেসি সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সভায় জানানো হয়, দ্রুত কফ পরীক্ষার মাধ্যমে যক্ষ্মা নির্ণয়ের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে টিওএনএটি মেশিন সংযোজন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জেলার ৫টি ইউনিয়নে এই মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। তবে পর্যায়ক্রমে জেলার সবগুলো ইউনিয়নে তা পাঠানো হবে।
শহরের কাটনারপাড়ায় তন্ময় কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই অ্যাডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শফিউল আজম। বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ মোঃ কাওছার রহমান। তথ্য উপস্থাপন করেন বগুড়া বক্ষব্যধি হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. আয়েশা সিদ্দিকা।
আরও বক্তৃতা করেন দৈনিক করতোয়ার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য শংকর এবং নাটাবের ফিল্ড লেভেল স্টাফ কামরুল ইসলাম। সভাটি পরিচালনা করেন নাটাবের বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হাসান রানু।
বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শফিউল আজম যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে বলেন, এখন যে এলাকায় যক্ষ্মা রোগী পাওয়া যাচ্ছে তার বাড়ির চারপাশে ৪০টি বাড়িতে বসবাসরত লোকজনদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। যক্ষ্মায় মৃত্যুর হার করনার চেয়ে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২০ এবং ২০২১ সালে করোনায় সারাদেশে ২৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু শুধু যক্ষ্মার কারণে ২০২১ সালে ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাই যক্ষ্মা রোগীদের সনাক্ত এবং তাদের অবশ্যই চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে।
বগুড়া বক্ষ ব্যাধি হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. আয়েশা সিদ্দিকা জানান, প্রচলিত মাইক্রোস্কপিক পরীক্ষার মাধ্যমে কফে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার জীবাণু থাকলেই যক্ষ্মা পজিটিভ বলে চিহ্নিত হয়। কিন্তু এর চেয়ে কম জীবাণু এমনকি যদি কেউ ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেটিও জিন এক্সপার্ট মেশিনে নির্ণয় করা সম্ভব।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বগুড়ায় বর্তমানে সদর উপজেলা, সারিয়াকান্দি, শিবগঞ্জ, দুপচাঁচিয়া, গাবতলী, শাজাহানপুর ও শেরপুরে জিন এক্সপার্ট মেশিনে যক্ষ্মা নির্ণয় করা হয়। এছাড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ছোনকা, ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি, গাবতলী উপজেলার বামনিয়া, সারিয়াকান্দির জোড়গাছা এবং শিবগঞ্জের গাংনগর এলাকায় টিওএনটি মেশিনে কফ পরীক্ষার মাধ্যমে যক্ষ্মা নির্ণয় করা হচ্ছে।
এসএ