‘আমি ফাঁসি দিয়ে মরে যাব’ বলে ছেলের সামনেই আত্মহত্যা করলেন মা
শেরপুরে ১২ বছর বয়সের ছেলে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসের ওপর রাগ করে মা নাসরিন আক্তার (৩২) গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের গৃর্দ্দানারায়নপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। নাসরিন পরিবহন শ্রমিক মৃত আব্দুর রহিম বাবুর স্ত্রী। তিনি ওই এলাকায় কাজল নামে এক ব্যক্তির বাসায় দুই বছর ধরে তার দুই ছেলে নাফিজ (১২) ও নাবিলকে (৮) নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
জানা গেছে, প্রতিদিন নাসরিনের বড় ছেলে বাড়ির বাইরে খেলাধুলা করতে গেলে সে তাকে বকাবকি করতো। শনিবার নাসরিনের বড় ছেলে স্থানীয় নবারুন পাবলিক স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র নাফিজ বাড়ির বাইরে খেলতে যায়। পরে দুপুরে নাফিজ বাসায় এলে তার মা তাকে প্রচণ্ড বকাবকি করে। এক পর্যায়ে নাসরিন তার ছেলের সঙ্গে রাগ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে বলতে থাকে ‘আমি ফাঁসি দিয়ে মরে যাব।’
পরে নাসরিনের বড় ছেলে দরজা ধাক্কিয়ে মা’র কাছে মাফ চেয়ে আর কোনো দিন বাইরে যাবে না বলে কাঁদতে থাকে। কিন্তু নাসরিন দরজা না খোলায় এক পর্যায়ে জানালা দিয়ে নাফিজ তার মাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলার চেষ্টা করতে দেখে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে স্টিলের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ততক্ষণে নাসরিনের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে মারা যায়। পরে শেরপুর সদর থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে।
নাসরিনের শ্বশুর বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুর এবং তার বাবার বাড়ি শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা গ্রামে। ২০২০ সালে নাসরিনের স্বামী আব্দুর রহিম বাবু ঢাকা-শেরপুর মহাসড়কে চলাচলরত শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ নামে বাস সার্ভিসে চাকরি করা অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর তারা ওই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন।
পুলিশ জানান, একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে এবং মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।