আরব আমিরাতের সাথে জিততেও দফারফা টাইগারদের
শক্তির ব্যবধানে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বহুগুণে এগিয়ে বাংলাদেশ। তবে ফরম্যাটটা টি২০ বলেই কি-না, সেই আমিরাতের বিপক্ষে বিপক্ষে জিততে ঘাম ছুটে গেল বাংলাদেশের। আজ রোববার দুবাইয়ে স্বাগতিকদের ৭ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। ম্যাচের ফয়সালা হয়েছে শেষ ওভারে।
দুবাইয়ে আজ বাংলাদেশের মনে কাঁপনই ধরিয়ে দিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে একটা সময় জয় অসম্ভব মনে হচ্ছিল না দলটির জন্য। তবে ইনিংসের শেষের দিকে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে ম্যাচ বাংলাদেশকে এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। শেষ ওভারে স্বাগতিকদের শেষ ২ উইকেট তুলে নিয়ে তিনিই বাংলাদেশকে এনে দেন ৭ রানের জয়।
টি২০তে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম জয়ের খোঁজে থাকা আরব আমিরাতের শুরুটা খুব একটা মন্দ হয়নি। দলীয় ২৬ রানে মুহাম্মদ ওয়াসিমের উইকেট হারালেও চিরাগ সুরি এবং আরিয়ান লাকরা দলকে চাপে পড়তে দেননি। তবে তাদের গড়া ৩৯ রানের জুটি ভাঙতেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিক দল।
সুরিকে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। আরেক সেট ব্যাটার লাকরাও (১৯ রান) শিকার হন এই অফ-স্পিনারের। এরপর চুন্দনগাপোয়িল রিজওয়ান, বাসিল হামিদ এবং জাওয়ার ফরিদ খুব দ্রুত বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় আরব আমিরাত। শেষ ওভারে দলটির দরকার ছিল ১১ রান।
শরিফুল ইসলামের করা প্রথম ২ বলে ৩ রান নিলেও, পরের ২ বলে আয়ান আফজাল খান (২৫ রান) এবং জুনায়েদ সিদ্দিকিকে (১১) ফিরিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন ১৮তম ওভারে ১৪ রান খরচ করে চাপে থাকা এই পেসার। এর আগে, বাসিল হামিদকেও নিজের শিকার বানিয়েছিলেন এই পেসার।
জাতীয় দলে ফেরার ম্যাচে শরিফুল ২১ রান খরচ করেন নিয়েছেন মোট ৩ উইকেট। মিরাজ সমান ৩ উইকেট পেতে খরচ করেছেন ১৭ রান। মুস্তাফিজুর রহমান ২ উইকেট নিয়েছেন ৩১ রান দিয়ে। আরব আমিরাত ইনিংসের বাকি দুটি রানআউট।
এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে হারাতে থাকে উইকেট। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার হিসেবে খেলতে নামা সাব্বির রহমানের উইকেট তুলে নেয় সাবির আলি। তার তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলে দেন সাব্বির। ফেরার আগে তিন বল মোকাবেলা করলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
খানিক পর ৮ বলে ১৩ রান করে ফিরেন চোট কাটিয়ে দলে ফেরা লিটন দাস। আউট হওয়ার আগে দারুণ শুরুর আভাস দিচ্ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। আয়ান আফজাল খানের করা তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ক্যাচ তুলে দেন জুনায়েদ সিদ্দিকের হাতে।
উইকেটে নেমে রানের চাকা সচল রাখার দায়িত্ব নেন আফিফ হোসেন। তবে সঙ্গ পাচ্ছিলেন না বাকিদের কাছ থেকে। মাঝে আউট হয়ে ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১২ রান), ইয়াসির আলী রাব্বি (৪ রান) ও মোসাদ্দেক হোসেন (৩ রান)। কেউই ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।
এরপর উইকেটে নেমে ইনিংস গড়ার চেষ্টা চালায় অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। শুরুতে চাপ সামলাতে সময় নিয়েছেন। তবে অন্যপাশ থেকে ব্যাট চালাচ্ছিলেন আফিফ। শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাট চালিয়ে বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন আফিফ-নুরুল জুটিই।
আফিফের ব্যাট থেকে আসে ৭৭ রান। ৫৫ বলের দায়িত্বশীল ইংনিসটিতে হাঁকিয়েছেন ৩টি ছয় ও ৭টি চার। অন্য প্রান্তে অধিনায়ক নুরুলের সংগ্রহ ২৫ বল থেকে ২ ছয় ও ২ চারে ৩৫ রান। তাদের ৮১ রানের এই জুটিতেই বাংলাদেশ পায় ১৫৯ রানের লড়াকু পুঁজি।
আরব আমিরাতের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট শিকার করেন কার্তিক মাইয়াপ্পান। একটি করে উইকেট পকেটে পোরেন সাবির আলী, আফজাল খান এবং যাওয়াদ ফরিদ।