বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ
রবিবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস। কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে দিবসটি।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়। ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’।
এ বছর দেশে সোমবার (১৭ অক্টোবর) দিবসটি উদযাপন করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রতি বছরের মতো এ বছরও দিবসটি উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে দিবসটি রোবরার হলেও এবার দেশে সোমবার (১৭ অক্টোবর) দিবসটি উদযাপন করবে কৃষি মন্ত্রণালয়।
বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন শুরু হয় ১৯৮১ সালে প্রথম আনুষ্ঠানিকতা আর প্রতিপাদ্য নিয়ে। ১৯৪৫ সালে ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা FAO (Food and Agricultural Organisation) প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান, দরিদ্র ও পুষ্টিহীনতা দূর করে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে FAO তাদের কার্যক্রম শুরু করে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ পৃথিবীর প্রায় ছয় দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে এখন প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যের অভাবে দরিদ্রের কষাঘাতে ধুঁকে মরছে। তাই তো FAO চেষ্টা চালাচ্ছে ২০১৫ সালের মধ্যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে, খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি, দরিদ্রতা, অসম খাদ্য বণ্টন ইত্যাদির কারণে এটি ২১৫০ সালের আগে অর্জিত হবে না বলে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান জানান।
মানুষ এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে খাদ্যের অধিকার নিয়ে। আর এ অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের প্রতিটি দেশ নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা সামনে রেখে তা বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছে। তবে খাদ্যের সঙ্গে কৃষির সম্পর্কটি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত, যদি কৃষিকে বাদ রেখে আমরা খাদ্যের কথা বলি তবে বিষয়টি হবে অযৌক্তিক।
কৃষি প্রধান এ দেশে এক কোটির ওপর বসতবাড়ি রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বসতবাড়িগুলো শুধুই আবাসস্থল নয় বরং একেকটি কৃষি, মৎস্য, পশু, হস্ত ও কুটির শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের দেশের আবাসস্থলগুলোতেই মূলত শাকসবজি, মশলাজাতীয় ফসল, ভেষজ, ওষুধ, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল, মৎস্য প্রকৃতি চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষকদের পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে এসব সম্পদ কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
বর্তমান সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার কার্যক্রম সফল করা সম্ভব যদি কৃষকদের ধ্যান ধারণা চিন্তার কাক্সিক্ষত পরিবর্তন করে এসব বসতভিটা কার্যকরী তথ্য নির্ভর জ্ঞান দ্বারা পরিচর্যা করা যায়। এ কার্যক্রম সফল হলে দেশের পুষ্টি ঘাটতি দূরীকরণ সম্ভব সঙ্গে সঙ্গে কুটির শিল্পের বিকাশে সহায়ক হবে। এতে কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নসহ ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষক পরিবার হবে স্বাবলম্বী।
দেশের পতিত জায়গার সুষ্ঠু ব্যবহার করে সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ দেশের কৃষি ক্লাবগুলো জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের দেশে সরকারি বা বেসরকারিভাবে নানা নামে কৃষি ক্লাব গড়ে উঠেছে। কৃষি ক্লাবগুলো মূলত কৃষি সম্প্রসারণ এবং আয়বর্ধনমূলক কাজ করে থাকে। এগুলো গড়ে ওঠার মূল কারণ উদ্ভাবিত প্রযুক্তি, তথ্য বা সেবা যথাসময়ে সাধারণ জনগণের হাতের নাগালে পৌঁছে দেয়া এবং তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। তবে তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে বাংলাদেশের কৃষিকে ডিজিটাল কৃষি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্তৃক পরিচালিত কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র নামে সক্রিয় কৃষি ক্লাব গঠিত হয়েছে।