ঘুরতে যাওয়ার টাকার জন্য নানা’কে খুন

টাকা-পয়সা লুট করতেই নানাকে হত্যার পরিকল্পনা করে নাতি আলভী এবং নাতনি আনিকা। তারা হত্যাকাণ্ডের এক মাস আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) বিপ্লব বিজয় তালুকদার।
বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
রাজধানীর চকবাজার মডেল থানার মসজিদ কমিটির সভাপতি মনসুর আহমেদকে হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার চকবাজার এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. শাহাদাত, মুবিন আলী, আনিকা তাবাসসুম, রাজু, রায়হান এবং সাঈদ ।
তাদের গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানাল পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৭ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে নিহতের শ্যালিকার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে তার স্ত্রী, মেজো ছেলে জুয়েল, তার স্ত্রী নিপা ও তাদের দুই ছেলে মনসুরকে বাসায় রেখে চিন কমিউনিটি সেন্টারে যান। পরের দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে সবাই দাওয়াত শেষে বাসায় এসে দেখেন মনসুর পিছনে বাধা অবস্থায় মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। ছেলে জুয়েল তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হাসপাতাল থেকে বাসায় এসে তারা দেখতে পান ঘরে থাকা আড়াই লাখ টাকা, ১২ ভরি স্বর্ণালংকার (যার আনুমানিক মূল্য নয় লাখ ৬০ হাজার টাকা) অজ্ঞাত ব্যক্তিরা লুট করে নিয়ে যায়। নিহতের মেয়ের ধারণা ছিল অজ্ঞাতনামা খুনিরা ঘরে প্রবেশ করে তার বাবাকে হত্যা করে টাকাসহ স্বর্ণালংকার ও মালামাল নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় চকবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী মো. শাহাদাত মুবিন আলভী ও তার বোন আনিকা তাবাসসুমকে মঙ্গলবার চকবাজার থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের এক মাস আগে আলভি এবং আনিকা পরীক্ষা শেষে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এর জন্য তাদের টাকার দরকার হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় তারা ওই দিনটিকে বেছে নেন। তারা আনিকা তাবাসসুমের ছেলে বন্ধু রাজুর সহায়তায় একটি নকল চাবি বানান। আর মনসুরকে অচেতন করে টাকা পয়সা লুট করার জন্য সিরিঞ্জ ও অচেতন করার ওষুধ সংগ্রহ করেন। গ্রেপ্তারকৃত রাজুর ছোট ভাই রায়হান ও সাঈদ মিলে পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা-পয়সা লুট ও হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা টাকা-পয়সা লুট ও হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’ সূত্র: ঢাকা টাইমস