দিবসপ্রধান খবরবগুড়া জেলা

বগুড়া হানাদার মুক্ত দিবস আজ

বগুড়া বাংলাদেশের একমাত্র জেলা, যেটি দখলে নিতে পাক বাহিনীর সময় লেগেছিল ২৩ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বগুড়ার ফুলবাড়ী এলাকায় পাক বাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণের মধ্য দিয়ে শহরকে হানাদার মুক্ত করা হয়। এর আগে, টানা তিনদিন মিত্রবাহিনীর সহায়তায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।

১৩ ডিসেম্বর বগুড়া হানাদার মুক্ত দিবস হিসাবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাক-হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছিল।

শহর এলাকা ছাড়াও বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ‘বাবুর পুকুর গণকবর’ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এক বিদগ্ধ জনপদ।

১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী বাবুর পুকুরে রচনা করেছিল এক ন্যক্কারজনক ঘটনার। সেখানে ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে পাক বাহিনী। ঐদিন বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া, শাহপাড়া, তেঁতুলতলা, হাজিপাড়া ও পশারীপাড়ায় রেড এলার্ট জারি করা হয়। এরপর শান্তি বাহিনীর করা তালিকা অনুযায়ী ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে পর্যায়ক্রমে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে সেনা কনভয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় শাজাহানপুরের খরনা বাবুর পুকুরের এক নির্জন খেজুর তলায়। ফজরের আজানের পূর্বেই মুক্তিযোদ্ধাদের সারিবদ্ধ ভাবে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোর থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা বগুড়াকে শক্র মুক্ত করার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। মুক্তিযোদ্ধারা নওদাপাড়া, চাঁদপুর ও ঠেঙ্গামারা এলাকায় নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেন। সেদিন তাদের সঙ্গে যোগ দেন অসংখ্য স্থানীয় যুবক।

১৩ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী শহরের ফুলবাড়ী এলাকায় পৌঁছানো পর পাক বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। তবে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পাক বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। ঐদিন দুপুরে ফুলবাড়ী এলাকার পাশে শহরের বৃন্দাবন পাড়া এলাকায় পাক বাহিনীর প্রায় ৭০০ সৈন্য অস্ত্রসহ মিত্রবাহিনীর ৬৪ মাউনটেন্ট রেজিমেন্টের বিগ্রেডিয়ার প্রেম সিংহের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

একই দিনে হানাদার মুক্ত হয় জেলার নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা। এর আগে, নভেম্বরের শেষদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রথম হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। পরে একে একে বগুড়ার অন্য উপজেলাগুলো শত্রুমুক্ত হয়।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button