সরকার দরিদ্র মানুষের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার জাতির পিতার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে দেশের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২ জানুয়ারি) ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২৪তম ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৩’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায়, দেশ গড়বো সমাজসেবায়’ যুগোপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অসহায়, অনগ্রসর মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করতে ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য দেশ পুনর্গঠনের শুরুতেই সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদানসহ সুদূরপ্রসারী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি প্রবর্তন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য পল্লী মাতৃকেন্দ্র শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেন। শিশুদের সুরক্ষায় প্রণয়ন করেন শিশু আইন, ১৯৭৪।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের হতদরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত শিশু, অনাথ প্রতিবন্ধী, কিশোর-কিশোরী, স্বামী নিগৃহিতা নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিসহ সহায় সম্বলহীন মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে লাগসই ও টেকসই প্রকল্প গ্রহণসহ সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ৫৪টি জনহিতকর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ১ কোটি ৮ লাখ উপকারভোগীর ভাতা ও অনুদানের টাকা সরাসরি দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে জি-টু-পি পদ্ধতিতে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চা-শ্রমিক, হিজড়া, বেদে ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ, বিশেষ ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করছি। ক্যানসার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগী এমনকি অগ্নিদগ্ধদের জন্য আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে সমাজসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে। ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিসহ ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিশু সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে টোল ফ্রি চাইল্ড হেল্প লাইন ১০৯৮ সেবা প্রচলন করা হয়েছে।
জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্র ও সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, দেশের সব সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সামাজিক উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে ও জাতিসংঘঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সমাজসেবা অধিদফতর বদ্ধপরিকর এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সদা তৎপর থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।