বগুড়ার শীর্ষ ২ স্কুল শিক্ষার্থীর মাঝে ফেল করার প্রতিযোগিতা! নেপথ্যে লটারি ভর্তি

বগুড়ার শীর্ষ দুই সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বগুড়া জিলা স্কুল ও বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২২ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ১০৮ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় শুরু হয়েছে ব্যাপক সমলোচনা।
ফেল করা এসব শিক্ষার্থী সকলেই লটারিতে ভর্তি হয়েছিল। করোনার কারণে তিন বছর ধরে লটারি পদ্ধতিতে চলছে ভর্তি কার্যক্রম। এতে অনেক শিক্ষার্থীরই মেধার পরিবর্তে লটারির মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ পায়। লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর পর থেকে প্রতিষ্ঠান দুটির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে দুই বছর ধরেই ফলাফল খারাপ হচ্ছে।
৩১ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষায় প্রকাশিত ফলাফলের তথ্য জাতীয় দৈনিক “সমকাল” থেকে নেয়া তথ্য অনুসারে, এবছর শিক্ষার্থীর মধ্যে বগুড়া জিলা স্কুলের মোট অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪১। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ জন এবং চতুর্থ শ্রেণী থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৪৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ জন অকৃতকার্য হয়েছে।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২৩৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন এবং চতুর্থ শ্রেণি থেকে অংশ নেয়া ২১৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৭ জন অকৃতকার্য হয়েছে ।
জানা গেছে, বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের উপরের শ্রেণিতে না ওঠানোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কারণে অভিভাবকরা বেশ চিন্তিত। অনেকেই সন্তানকে নতুন ক্লাসে ওঠাতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে উঠানোর জন্য কিছু অভিভাবক ধরনা দিচ্ছেন, কিন্তু আমি এ বিষয়ে অনড়।’
সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘খুব আশা ছিল মেয়েকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ানোর আগে দু’বার পরীক্ষা দিয়েও চান্স পায়নি। গত বছর লটারিতে আমার মেয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেলে সে আশা পূরণ হয়। কিন্তু বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করায় আর চতুর্থ শ্রেণিতে উঠতে পারছে না সে। তাই মেয়েকে এ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতেই রাখব নাকি অন্য স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি করাব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
বগুডা জিলা স্কুলে ৪র্থ শ্রেণীর অকৃতকার্য এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রশ্ন অনেক কঠিন হয়। তাই উত্তর দিবার পারিনি সেজন্য ফেল করছি। পরের বার পাশ করমু।
বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মোস্তাফী বলেন, ‘অকৃতকার্যের এই ধারাবাহিকতা থাকলে এসএসসি পরীক্ষায় প্রভাব পড়বে বিধায় যারা ফেল করেছে তাদের ওই ক্লাসেই থাকতে হবে। পরেরবারও ফেল করলে টিসি দিতে বাধ্য হব।’