ধর্মপ্রধান খবর

জুমার দিনের বিশেষ আমল

আল্লাহ তা’আলা কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা- ০৯)।

রাসুল (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।(ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)।

এক হাদিসে নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে দিনগুলোতে সূর্য উদিত হয়, ওই দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। ওই দিন হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে। ওই দিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং ওই দিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। আর ওই দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম শরিফ , হাদিস নম্বর ৮৫৪)

মহানবী (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, জুমার দিন দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় আছে , কোনো মুসলিম যদি সেই সময়টা পায়, আর তখন যদি সে নামাজে থাকে, তাহলে তার যেকোনো কল্যাণ কামনা আল্লাহ পূরণ করেন। (বুখারি, হাদিস নম্বর ৬৪০০)

জুম্মার দিনের কয়েকটি বিশেষ আমল:

মুসলিম উম্মাহর জন্য জুমা আদায় করা ছাড়াও নামাজের আগে পরের বিশেষ কিছুআমল রয়েছে। আর এসবের ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি। তাহলে আজকের প্রতিবেদনে হাদিসে বর্ণিত এ সকল আমল গুলো তুলে ধরা হলো,

১। সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জুম্মার দিন সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কাহফ সূরা তেলাওয়াত করা ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এটি কুরআনুল কারীমের ১৫-তম পারার ১৮-নং সূরা। সম্পূর্ণ সূরাটি তেলাওয়াত করতে না পারলেও প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত হলেও তেলাওয়াত করা উত্তম। আর তাতে মিলবে গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত।

*যে ব্যক্তি জুম্মার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুম্মা থেকে অপর (পরবর্তী) জুম্মা পর্যন্ত নুর হবে।

**যে ব্যক্তি জুমআ’র দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করবে, সে সাতদিন পর্যন্ত সব ধরনের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে।

***এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব (কবিরা গুনাহ ব্যতীত) গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।

২। বেশী বেশী দরুদ পাঠ করা

জুমার দিন বেশী বেশী দরুদ পাঠ করা উত্তম। যদি কোন ব্যক্তি একবার দুরুদ পড়ে তবে তার প্রতি দশটি রহমত নাযিল হয়।

আর যে ব্যক্তি জুম্মার দিন আসরের নামাজের পর ৮০ বার দুরুদ পড়ে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়, এবং ৮০ বস ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয়।

৩। আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত আমল করা

জুম্মার দিন আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময় নামাজে অতিবাহিত করা উত্তম। কিন্তু এ নামাজের অতিবাহিত করার অর্থ হলো-আসর নামাজ আদায় করে মাগরিব পড়ার নিয়ত বাকি সময় মসজিদে অবস্থান করে তাজবি-তেলাওয়াতে অতিবাহিত করা। অর্থাৎ বেশি বেশি দুরুদ পড়া। বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া। আর তাতেই নামাজে অতিবাহিত করার সওয়াব মিলবে। লাভ করবে অসংখ্য রহমত ও বরকত।

জুম্মার নামাজ এবং জুমার দিনের ইবাদত অনেক ফজিলতপর্ণ হওয়ার কারণেই বিশ্বনবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার দিন জুমা পরিত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন।

হাদীসে এসেছে-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি (ইচ্ছে করে) অলসতা বস তো ৩-টি জুম্মার নামাজ ছেড়ে দিবে, আল্লাহতায়ালা তাঁর হৃদয়ে মোহর মেরে দেন (নাউজুবিল্লাহ)।(মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালেক)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুম্মার দিন নামাজ ও ইবাদাতের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করা। সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা। বেশি বেশি দুরুদ পড়া। শরীর থেকে মাগরিব পর্যন্ত ইবাদত-বন্দেগী ও ইস্তেগফার এ অতিবাহিত করা। জুম্মার দিনের রহমত বরকত ও মাগফিরাত লাভ করা।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button