গাবতলী উপজেলাপ্রধান খবর

বগুড়ায় সরকারি কাজে বালু উত্তোলনের নামে পুকুর ভরাট করছেন চেয়ারম্যান

বগুড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে গাবতলী উপজেলা নেপালতলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম (বাবু) ও স্থানীয় পরাজিত এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর বিরূদ্ধে।

বগুড়া গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের জাতহলিদা গ্রামে একটি পুকুরের পাশ দিয়ে মাটির সড়ক দিয়ে চলাফেরা করে আনুমানিক শতাধিক পরিবার। কিন্তু স্বাভাবিক রাস্তা থাকলেও নিচে বড় পুকুর থাকার কারণে রাস্তা কিছুদিন পর পরই ভেঙে যায়। এভাবেই শুরু হয় চলাচলের প্রতিবন্ধকতা।

বিষয়টি একাধিকবার আলোচনায় থাকলেও আশার আলো দেখতে দেরী হচ্ছিল এলাকাবাসীর। এরপর এই অসুবিধার বিষয়টি চলে আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় পর্যন্ত। পরবর্তীতে অনুমোদন পায় অবহেলিত রাস্তার সংস্কারের কাজ।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক নেতা অনুমোদন ছাড়াই সুখদহ নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে ভূ-গর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করছেন।

২রা মার্চ (বৃহস্পতিবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সুখদহ নদীর ভূ-গর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করে আনুমানিক ৫০শতক একটি পুকুর ভরাট করার করা চিত্র।

স্থানীয়রা জানান, পুকুরের রাস্তার পাশে সামান্য অংশ সরকারি জমি, কিন্তু বালু উত্তোলন করে পুকুরের মাঝখানে ফেলা হচ্ছে।

পুকুরের মালিক আব্দুল হান্নান, জুয়েল, সেভিট ও রবিন। কিন্তু বাড়িতে ছেলে মানুষ না থাকায় এক গৃহবধূর সাথে কথা বলতে বেড়িয়ে আসে নতুন এক গল্প।

ভেটু নামের স্থানীয় এক পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী করছেন বালু উত্তোলন । তিনি গত স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচনে নেপালতলী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে ফ্যান প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন এবং পরাজিত হয়েছেন। সে কাজলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং বালু উত্তোলন করায় তার ব্যাবসা।

সরকারি কাজ হবে এমন খবর দিয়ে পরাজিত ইউপি সদস্য ভেটু ও ৫নং নেপালতলী ইউনিয়ন পরিষদদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম (বাবু) পুকুরের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বলেন, যেহেতু সরকারি রাস্তার কাজ হবেই, সেই সাথে সরকারি টাকায় তোমাদের পুকুরটা ভরাট করে দিবো! বিনিময়ে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আলাদা ভাবে ভরাট করলে অনেক টাকা খরচ হবে।

গৃহবধূ জানান, তাঁরা চেয়ারম্যানের কথায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে পুকুর ভরাট করে নিচ্ছেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে একাধিকবার অভিযুক্ত পরাজিত ইউপি সদস্য ভেটুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলেও তৈরি হয় একই গল্প।

এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ: স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, শহিদুল ইসলাম (বাবু) চেয়ারম্যান হবার পর এলাকায় চাকরি বানিজ্য, মাদকদ্রব্য কেনা-বেচার তদবির, শালিশী বৈঠকে অর্থ বাণিজ্য, জন্ম সনদ দিয়ে অর্থ গ্রহন, ভোটার পরিবর্তনের নামে অর্থ গ্রহণ, মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদানের নামে অর্থ গ্রহণ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, গর্ভকালীন ভাতা প্রদানে অর্থ বাণিজ্য সহ তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

(এ আর)

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button