প্রধান খবরবগুড়া জেলা

বগুড়ায় অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন পেজে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের ছবি ব্যবহার

প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে একদিকে যেমন সহজ করেছে, অন্যদিকে এর অপব্যবহারের কারণে যুক্ত হয়েছে কিছু বিড়ম্বনাও। বর্তমান সময়ে আমাদের দৈনন্দিন বেশিরভাগ কাজই কোনো না কোনোভাবে প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত, তাই প্রয়োজনের তাগিদেই এটি এড়িয়ে চলার তেমন কোন সুযোগ নেই। তবে, অপব্যবহারকারীদের কারণে এই প্রয়োজনীয় মাধ্যম ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকেই হচ্ছেন হয়রানির শিকার। আর এই হয়রানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্কুল কলেজ শিক্ষার্থী ও নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী।

বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইডের “বাংলাদেশে অনলাইনে নারীর প্রতি সহিংসতা” শীর্ষক সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে অনলাইন ব্যবহারকারী নারীদের প্রায় ৬৩.৫১% সহিংসতার শিকার হয়েছেন- যা আগের বছরের তুলনায় ১৪% বেশি৷ এরমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার শিকার হচ্ছেন তারা, এই হার ৪৭%।

আক্রামণাত্মক বিষয় না হলেও এসব পোস্টে বিব্রত হন নারীরা। যার ফলে তিনি সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হন, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার মানসিক স্বাস্থ্য।

এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে বগুড়ায়। “Bogura All College and School sarcasm crush & confession” (পেজ লিংক ) https://www.facebook.com/Bogura-All-College-School-Sarcasm-Crush-Confession-101972535945666/?mibextid=ZbWKwL
নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে কিছু স্কুল কলেজের মেয়ে শিক্ষার্থীদের ছবি আপলোড করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, পেজের কাউকে তিনি চেনেন না, কিংবা ছবি ব্যবহারের জন্য তার কোনো অনুমতিও কেউ নেয়নি। একটি ফেসবুক আইডি থেকে তার ছবি দিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়ে থাকে, ফলে বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান মেয়েটি। বিষয়টি তার বন্ধুদের জানালে তারা ওই আইডির ইনবক্সে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার ভয় দেখান। বেশ কয়েকবার ভয় দেখানোর পর ওই আইডি থেকে তার ছবি পোস্ট করা বন্ধ হয়। তবে যেকোনো নারীর জীবনে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে পরিবারের সমর্থন তার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বগুড়া আইন কলেজের অধ্যাপক এ্যাড. হুমায়ূন কবির বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, যদি কেউ মনে করেন যে তার ছবি-ভিডিও অনুমতি ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে, তাহলে সে আদালতের পাশাপাশি ফেসবুক -ইউটিউবে অভিযোগ করতে পারবেন। তখন সত্যতা পেলে কর্তৃপক্ষ সেই একাউন্ট বন্ধ করে দেয়। আবার কেউ মনে করেন অনুমতি ছাড়া কেউ ছবি-ভিডিও ব্যাবহার করছে তাহলে সে কপিরাইট রেজিস্ট্রার অফিসে অভিযোগ করতে পারবেন। এখানে আর্থিক-নৈতিক দুই রকমের শাস্তি হয়। কেউ বানিজ্যিক ভাবে ছবি ব্যাবহার করলে সেটি আর্থিক আর অবানিজ্যিক ভাবে ছবি ব্যাবহার করলে সেটা হবে নৈতিক অপরাধ। বানিজ্যিক ভাবে ছবি ব্যাবহারে সর্বোচ্চ ৪ বছর আর সবনিম্ন ৬ মাস।অবানিজ্যিক ভাবে ব্যাবহার করতে সবনিম্ন ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ইনষ্পেক্টর সাইহান ওয়ালি উল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সর্বদা তৎপর।

(এ আর)

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button