সারাদেশ

নাটোরের সফল ফ্রিলান্সার তানভির রোকন

রাজু আহমেদ, নাটোর: তানভীর রোকন একজন সফল ফ্রিলান্সার। পরিশ্রম যে সফলতা এনে দেয় তারই প্রমান দিয়েছে রোকন। পড়াশোনায় বাবার মার স্বপ্ন পুরন করতে না পারলেও অনলাইনে আয় করে বাবা মা ও পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সে। মাসে ২/৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে চমক দেখিয়েছে তানভির রোকন।

বাবা হাফিজুর রহমান, পেশায় টিএমএসএসের একজন সিনিয়র ম্যানেজার। মা রুবিয়া খানম একজন গৃহিণী। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তানভীর রোকন। জন্ম ২০০১ সালে নাটোর সদর উপজেলার ধরাইল গ্রামে। ২০১৮ সালে এসএসসি ও ২০২০ সালে এইচএসসি পাশে করেন নাটোর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে।

বর্তমানে সে পড়াশোনা করছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে মাল্টিমিডিয়া এন্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগে (MCT)। পাশাপাশি বিদেশি একটা কোম্পানিতে দেশ থেকে চাকরি করছেন। তার ভবিস্যৎ পরিকল্পনা নিজের একটি Company করার। কাজ করতে চায় ভিডিও গেমস তৈরি নিয়ে। এ বিষয়ে পড়াশোনা করছে। মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়। সরকারি ভাবে আমি সাহায্য পেলে আরো ভালো কিছু করতে পারবে রোকন।
শুরু টা হয় ২০১৮ সালে, বাবার কাছে আবদার ছিল একটা মটরসাইকেলের কিন্তু বাবা মা বুঝিয়ে তাকে একটা কম্পিউটার কিনে দেন। তারপর থেকে ফ্রিলান্সার হিসেবে নিজেকে প্রমান করার শুরু।

তানভির রোকন জানান, ২০২১ থেকে আয়ের পরিমান বাড়তে থাকে। এখানে কাজগুলো করা যায় নিজের ইচ্ছে মতো, তাই পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করা যায় কোন সমস্যা হয় না। পড়াশোনায় যেন কোন ক্ষতি না হয় তাই Fiverr এবং Upwork এর মতো মার্কেটপ্লেসে কাজ করা বন্ধ করে দেই। এখন বাবা মা ও অনেক খুশি কারন তাদের ছেলে আজ সফল হয়েছে। বাবা মা আজ মানুষের কাছে গর্ব করে বলতে পারে আমার ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। আমাকে আমার বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমার “MCT” বিভাগের শিক্ষক গন আমাকে অনেক বেশি সাহায্য করেছেন।

তানভির রোকন জানান, বাবা মা তার ভবিষ্যত নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করতেন কারণ আমি ঠিক মতো পড়াশোনা করতাম না। বাবা মার একমাত্র সন্তান হওয়ায় এতো কিছু চিন্তা করতাম না, ভাবতাম জীবন এভাবেই পার হয়ে যাবে। বাবা মার কথা খুব কম শুনতাম। এজন্য বাবা মা এক সময় ধরেই নিয়ে ছিল আমি হয়তো ভবিষ্যতে তেমন কিছু করতে পারবো না। বাবা একদিন রাগ করে বলেছিলেন তুমি যদি ভেবে থাকো তুমি কিছু না করেও আমার সব কিছু পাবে তাহলে ভুল ভাবছো, আমি তোমাকে কিছুই দেবনা নিজে অর্জন করে দেখাও

আমার একটাই লক্ষ্য ছিলো নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। অনেক চেষ্টা করেও কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তার পর বাবা একদিন বললো অনেকেই অনলাইনে কাজ করে টাকা কামায় ওটা ও তো করতে পারো। তার পর খুঁজতে খুঁজতে “গ্রাফিক্স ডিজাইন” এর ব্যাপারে জানতে পারি। কিন্তু শিখবো কি ভাবে তা জানি না শুধু জানতাম শিখতে হবে, কিছু করতেই হবে। কিন্তু কোন মাধ্যম খুঁজে পাচ্ছিলাম না, আমার চাচা Udemy থেকে কোর্স কেনার পরামর্শ দেন। আমি আশেপাশে অনেক মেন্টর খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছিলাম না। মার্কেটপ্লেসে কাজে নামার পর আমি মেন্টর পাই। তার পর কিছু সময় কাজ করি মার্কেটপ্লেসে। তার পর Amazon এবং Shopify তে কাজ শুরু করি। তার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয় নাই।

আজ এই অবস্থায় আসার জন্য আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার শিক্ষক গন, আমার পরিবার আমাকে অনেক বেশি সাহায্য করেছেন। অনেক বাধা অতিক্রম করে আমি আজ এখানে এসেছি শুধু তাদের জন্য, আলহামদুলিল্লাহ।
পরিবার আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছে। শিক্ষকরা উৎসাহ দিয়েছে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির সহযোগিতায় আগামীতে দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button