সোনাতলা উপজেলা

বগুড়ায় জমির বিরোধের জেরে প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ

বগুড়ার সোনাতলায় জমি-জমার বিরোধের জেরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে হামলা-মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

৪ জুন সোনাতলা আমলী আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

এর আগে ৩০ মে বিকেল ৫টার দিকে সোনাতলা সাবরেজিস্ট্রি চত্বরে এই মারধরের ঘটনা ঘটে।

তবে তাদের দাবি, হামলার পর থেকেই নানারকম ভয়-ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন প্রতিপক্ষরা। এতে করে ভুক্তভোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক হলেন আসাদুল বারী। তিনি সোনাতলার পদ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। মামলার অপর আসামিরা হলেন, ফিরোজুল বেপারী, সাইদুর রহমান, হারেজ উদ্দিন ও লিখন বেপারী। লিখন বাদে বাকিরা আসাদুলের সহোদর ভাই। এরা সবাই সোনাতলার হুয়াকুয়া এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বাদী একই এলাকার খায়রুল ইসলাম। হামলায় তার ছেলে ও ভাতিজাকে মারধর করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। মামলার বিবাদীরা খায়রুল ইসলামের আত্মীয়-স্বজন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক সম্পত্তির কিছু অংশের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধানশিক্ষক আসাদুল বারী ও অন্যদের সঙ্গে খায়রুল ইসলামের পরিবারের দ্বন্দ্ব রয়েছে। ৩০ মে নিজেদের প্রাপ্য সম্পত্তির দানপত্রের দলিল করার জন্য সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যান খায়রুল ইসলাম ও তার ভাতিজারা। সেখানে দলিল লেখালেখি চলার সময়ে প্রতিপক্ষ আসাদুল ও তার ভাইরা এসে জমি না দেয়ার দাবি তুলে মারধর শুরু করেন।
হামলায় খায়রুলের ছেলে মশিউরের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে প্রধানশিক্ষক আসাদুল। সাইদুর রহমান তার হাতে থাকা মোটরসাইকেলের চাবি দিয়ে মশিউরের চোখে, নাকে, গালে খোঁচা দিয়ে জখম করে। এ সময় সাইদুরের ঘুষিতে মশিউরের নাক ফেটে রক্ত বেরিয়ে পড়ে। তাকে বাঁচাতে চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম এগিয়ে এলে অন্য অভিযুক্তরা রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তারা মাটিতে পড়ে গেলে আরও মারধর করে অভিযুক্তরা।
পরে তাদের উদ্ধার করে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে শরিফুলের মাথায় তিনটি সেলাই দেন চিকিৎসকরা। আর গুরুতর আহত হওয়ায় মশিউরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি।
খায়রুল ইসলামের ভাতিজা শরিফুল ইসলাম জানান, নিয়ম অনুযায়ী আমার বাবা ও চাচা তাদের ফুপুর অংশের ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ জায়গা পান। এই জমি নেয়ার কথা উঠলেই আসাদুল বারী ও তার ভাইয়েরা আমাদের বাঁধা দেন। অথচ ওই জমিতে তাদের কোনো অংশ নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের অত্যাচার করে আসছেন। বিভিন্নভাবে আমাদের চলার পথে প্রতিবন্ধকতা করে রাখে।

অবশেষে দাদির পরিবারের পক্ষ থেকে ওই জমি আমাদের বুঝিয়ে দেয়ার জন্য সাবরেজিস্ট্রি অফিসে বসার দিন নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য আমরা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যাই। কিন্তু খবর পেয়ে ওরা ছুটে আসে। এসেই আমাদের মারধর শুরু করে।

শরিফুল ইসলাম বলেন, মারপিটের পর থেকে এলাকায় তারা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমনও বলছেন থানা-পুলিশ তাদের কিছুই করতে পারবে না। আমাদের নাকি তারা কোনোদিন ওই জমি নিতে দিবে না।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী খায়রুল বাশার বলেন, আমলী আদালতের বিচারক সুমাইয়া সিদ্দিকা মামলাটি আমলে নিয়ে সোনাতলা থানার ওসিকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আহত দুজনের মেডিকেল সার্টিফিকেট আদালতে জমা দিতে বলেছেন বিচারক।
এ বিষয়ে জানতে মামলার অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি।

সোনাতলা থানার ওসি সৈকত খান বলেন, ঘটনাটি জানি। তবে মামলার তদন্তের চিঠি এখনও হাতে আসেনি। এলে আমরা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখবো।’

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button