গভীর রাতে বাঁশঝাড়ে বেঁধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অপমানে স্বামীর আত্মহত্যা! গ্রেফতার এক

বগুড়ার গাবতলীতে সুদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় রিমা বেগম নামে এক গৃহবধূকে গভীর রাতে বাঁশ ঝাড়ে বেঁধে নির্যাতন করার অপমান সইতে না পেরে তার স্বামী দিনমজুর আব্দুল মালেক (৪০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার ভোরে উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পাররানীরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় আব্দুল মালেকের স্ত্রী রিমা বেগম বাদী হয়ে গাবতলী থানায় আত্মহত্যা প্ররোচণার মামলা দায়ের করেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী গোলজার রহমানকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে। সে ওই গ্রামের মৃত আকিমুদ্দিনের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চারমাস আগে মালেকের স্ত্রী রিমা দেড়ভরি স্বর্ণ, ব্যাংক চেকের ফাঁকা পাতা বন্ধক রেখে সুদের ওপর গোলজার কাছ থেকে ৩৬ হাজার টাকা নেন। পরে সেই টাকা সুদে আসলে লাখ টাকায় দাড়ায়। ওই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বৃহস্পতিবার গোলজার তাঁর দলবলসহ রিমাকে গ্রামের একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত নানাভাবে রিমার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ওই সময় গোলজারের লোকজন মালেকের বাড়িতে গিয়ে টাকা না পেলে রিমাকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করানোর হুমকি দেয়। খবর পেয়ে রাতেই রিমার বাবা ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে দাদন ব্যবসায়ী গোলজারের কাছ থেকে মেয়েকে ছাড়িয়ে নেন। এই অপমান সইতে না পেরে দিনমজুর আব্দুল মালেক শনিবার দিবাগত রাতে শয়ন ঘরের তীরে দঁড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
বগুড়ার গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার জানান, মালেকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা দায়ের পরেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে আদালাতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় কোন অভিযোগ জানানো হয়নি। তাহলে আগেই গোলজার গ্রেপ্তার হতো। মালেকের মৃত্যু দুঃখজনক।