বগুড়ায় কলেজ কর্মচারীর প্রতারণায় দুই বছর পিছিয়ে গেলেন শিক্ষার্থীরা

মাসুম হোসেন: অনলাইনে তালিকা দিয়ে আবেদন করে পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাননি তারা। অবশেষে সরকারি এক কলেজে এসে যোগাযোগ করেন কর্মচারীদের সঙ্গে। ভর্তির টাকাও জমা দেন। খাতায় তাদের নামও উঠে। ক্লাসও করেন নিয়মিত। তবে এইচএসসি পরীক্ষার দিনে তারা জানতে পারলেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীই নন তারা। তারা যে প্রতারিত হয়েছেন তা পরিস্কার হয়ে গেল। তবে সময় লাগলো বছর দুয়েক।
এমন ঘটনা বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রতারিত হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন কলেজ প্রাঙ্গনে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের কর্মচারী হারুনুর রশিদ কিছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ৮ হাজার টাকা নিয়েছেন। এরপর খাতায় তাদের নামও উঠানো হয়। নিয়মিত ক্লাসও করতেন তারা। এইচএসসি পরীক্ষা দিন ঘনিয়ে আসতে থাকলে হারুনের কাছে প্রবেশপত্র চাওয়া হয়। কিন্তু তা দিতে তালবাহানা শুরু করেন হারুন। অবশেষে পরীক্ষার দিনেও প্রবেশপত্র না পেয়ে কলেজে এসে অবস্থান নেন তারা।
অভিযুক্ত হারুন ওই কলেজের অস্থায়ী কর্মচারী। কলেজে কর্মরত কয়েকজন সহযোগী নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জালিয়াতি করেন বলে অভিযোগ।
জানতে চাইলে হারুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ২১ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যা মিথ্যা। আমি শুধু শারমিন আক্তার নামে এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা নিয়েছিলাম গতকাল বিকেলে। সেই টাকা জমা হয়নি। এতে আমার কোনো ভুল নেই। ওই মেয়েটি অনেক দেরিতে টাকা দিয়েছে।
রাতুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী আপনার মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, রাতুল সম্পর্কে আমার আত্মীয় হয়। তাকে কলেজে ভর্তি করাতে পারিনি। তবে চেষ্টা করেছিলাম।
অন্যদিকে শিক্ষার্থী রাতুল ইসলাম বলেন, হারুনকে বছর দুয়েক আগে আট হাজার টাকা দিয়েছিলাম। তিনি আমাকে কলেজে ভর্তি করানোর কথা বলে এই টাকা নেন। ক্লাসের খাতায় আমার নামও উঠানো হয়। মানবিক বিভাগে ১৫৬৮ রোল ছিল আমার। নিয়মিত ক্লাসও করেছি। বেতনও দিয়েছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। কিন্তু পরীক্ষার দিনেও প্রবেশপত্র দিতে পারেননি হারুন। পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা তিনি ঠিকই নিয়েছেন। এরপরেও আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
শাহ সুলতান কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, ১৫-২১ জন শিক্ষার্থী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রতারকরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পান-এটাই আমাদের দাবি।
জানতে চাইলে শাহ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহিদুল আলম বলেন, কিছু শিক্ষার্থী প্রতারিত হয়েছে। তারা আমার কলেজের শিক্ষার্থীই নয়। তাদের সঙ্গে কলেজের যে সকল কর্মচারী প্রতারণা করেছেন-তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যে টাকা দিয়েছেন-তা হয়ত প্রমাণ করতে পারবে না। এরপরেও প্রতারকরা শাস্তি পাবেন।