দেশে ফিরেই গ্রেফতার থাকসিন, ৮ বছরের জেল

দীর্ঘ ১৫ বছর পর দেশে ফিরেই গ্রেফতার হয়েছেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। বিমানবন্দর থেকেই তাকে জেলে যেতে হয়েছে। খবর আল-জাজিরা।
থাকসিন সিনাওয়াত্রা ১৫ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ব্যক্তিগত বিমানে করে ডন মুয়াং বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নেওয়া হয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে। চার মামলার শুনানি শেষে ৮ বছরের জেল হয় তার।
সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে ডন মুয়াং বিমানবন্দরের প্রাইভেট রানওয়েতে অবতরণ করে থাকসিনকে বহনকারী বিমানটি। একটু পরই গাঢ় নীল রঙের স্যুট এবং গোলাপি টাই পরিহিত অবস্থায় বিমান থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। তাঁকে বরণ করে নিতে বিমানবন্দরে হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছিলেন। তাদের অধিকাংশ থাকসিনের মেয়ের নেতৃত্বাধীন ফেউ থাই পার্টির নেতা-কর্মী।
বিমান থেকে বেরিয়ে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে টার্মিনাল ভবনের দিকে এগিয়ে যান থাকসিন। পরে টার্মিনাল ভবনের পাশে স্থাপিত থাই রাজার প্রতিকৃতির সামনে গিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পরে টার্মিনালের বাইরে উপস্থিত হাজারো মানুষের উদ্দেশ্যে প্রথমে হাত জোড় করে এবং পরে এক হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
টেলিকম ব্যবসায়ের মাধ্যমে দেশটির শীর্ষ ধনকুবের বনে যান থাকসিন সিনাওয়াত্রা। পরে ২০০১ সালে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। পরে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই তিনি দেশের বাইরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। অবশ্য মাঝে একবার ২০০৮ সালে তিনি থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। এরই মধ্যে থাকসিনের অনুপস্থিতিতেই সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে চারটি মামলায় ১২ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সফল এই নির্বাচিত নেতাকে দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণশীল রাজকীয়রা ভয় পেয়ে এসেছে। থাকসিনকে দুর্বল করার জন্য সামরিক অভ্যুত্থান এবং বিতর্কিত আদালতের মামলাগুলোকে তারাই মূলত সমর্থন যুগিয়ে এসেছে।
এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এই পরিস্থিতিতে থাকসিনের দেশে প্রত্যাবর্তন ও আটক করে করাগারে পাঠানোয় পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।